ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে সেগুলো নির্ভর করে আপনি কোন দেশে যাবেন, কি উদ্দেশ্যে যাবেন, আপনি কোন দেশের নাগরিক তার উপর। পাসপোর্ট যেমন একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত পুস্তিকা তেমনি ভিসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অনুমতিপত্র। এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে চাইলে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন।

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে
এই অনুমতিপত্রই হলো ভিসা। ভিসা ও পাসপোর্ট ছাড়া এক দেশ থেকে  অন্য দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না বা থাকতে পারবেন না, যদি প্রবেশ করেন তাহলে আপনি সেই দেশের অবৈধ নাগরিক বলে গণ্য হবেন।ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই আর্টিক্যালটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

পেজ সূচিপত্র 

দেশ বাছাই বা নির্বাচন 

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এ সম্পর্কে আলোচনার আগে আমাদেরকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন দেশে যেতে আগ্রহী বা দেশ নির্বাচন। এই মহাবিশ্ব বা পৃথিবীতে অনেকগুলো দেশ রয়েছে।

প্রথমেই আপনাকে বাছাই বা নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন দেশে যাবেন বা কন দেশে যেতে ইচ্ছুক। দেশ ভেদে এই আবেদনের ধরন ও কাগজপত্রের চাহিদা বা  ভিসা প্রক্রিয়াকরণ আলাদা আলাদা হতে পারে।

ভিসার ধরন বা ক্যাটাগরি

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই শিরোনাম আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো ভিসা ধরন বা ক্যাটাগরি সম্পর্কে। দেশ নির্বাচন করার পরে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কি উদ্দেশ্যে বিদেশে যাবেন। হতে পারে ভ্রমন, ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা, স্টুডেন্ট বা মেডিকেল ভিসা। যেকোনটা নির্বাচন করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ Fexo 120 এর কাজ খাওয়ার নিয়ম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দাম ও সতর্কতা

এছাড়াও যদি কেউ পার্মানেন্টলি থাকার জন্য বিদেশে যায় তাহলে অভিবাসী ভিসা করতে হবে। কর্মের জন্য বিদেশে গেলে তাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হবে। ভিসার ধরন বা ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে কিভাবে এই আবেদন করতে হবে ও কি কি কাগজপত্র লাগবে। সে জন্য ভিসার ধরন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ভিসা আবেদনের এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনায় এখন আমরা জানবো এ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগে সে সম্পর্কে। দেশ নির্বাচন ও ভিসার ধরন বা ক্যাটাগরি নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে, সেই দেশ বা যে ধরনের ভিসায়

আরো পড়ুনঃ মোনাস ১০ এর কাজ খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা

আপনি বিদেশে গমন করতে ইচ্ছুক সেই দেশ ও ভিসার ধরন অনুসারে যে সকল কাগজপত্র চায় সেগুলো আপনাকে সরবরাহ করতে হবে। এই আবেদন করার জন্য সাধারণত যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়, সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।

  • পাসপোর্ট (৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে)।
  • নির্ভুলভাবে পূরণ কৃত আবেদন ফর্ম।
  • সদ্য তলা ২ কপি  পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • জন্ম নিবন্ধন সনদ।
  • ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদ।
  • করোনা টিকার সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্র)।
  • নির্ধারিত ফি।
  • ইনভাইটেশন পত্র।
  • ব্যাংক সলভেন্সি ও ব্যাংক বিবরণী।
  • স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সঠিক কাগজপত্র।
  • চাকরিজীবী হলে এই আবেদন করার জন্য অফিস কর্তৃক সুপারিশকৃত ছুটির দরখাস্ত থাকতে হবে।
  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পদের বিবরনী। 
  • ব্যবসায়ীক কাগজপত্র।
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে ডাক্তারি সার্টিফিকেট।
  • চাকুরির ক্ষেত্রে (প্রয়োজনীয় কাগজপত্র)।
  • এছাড়াও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আরো কিছু কাগজপত্র লাগতে পারে

সাধারণত উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র লাগে। তারপরও কাগজের বিষয়গুলো নির্ভর করে আপনি যে উদ্দেশ্যে যাবেন বা যে দেশে যাবেন সেই দেশের চাহিদার উপর।

ভিসা জন্য আবেদন করার নিয়ম

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনায় এখন আমরা জানবো এই আবেদনের নিয়ম সম্পর্কে। ভিসা করার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন মেনে আমাদেরকে  এই আবেদন করতে হবে। প্রথমেই আপনাকে ভাবতে হবে আপনি কি ধরনের ভিসার

ভিসা আবেদন করার নিয়ম
আবেদন করবেন। যেমন কাজের ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, পারমিট ভিসা,  সাংবাদিক ভিসা, ভ্রমণ ভিসা, গৃহকর্মী ভিসা, মেডিকেল ভিসা, ইত্যাদি। যেই ধরনের ভিসা আপনি নিতে চান সেই ভিসার নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে।

ভিসার জন্য আবেদন ফর্ম পুরন করার নিয়ম

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনায় এখন আমরা জানবো এই আবেদনের ফর্ম পুরন বা কিভাবে এই আবেদনের ফরন পুরন করতে হয় সে সম্পর্কে। ভিসা অথবা পাসপোর্ট তৈরির জন্য আপনি নিজে ফর্ম সংগ্রহ করে স্পষ্ট অক্ষরে পূরণ করে

অ্যারো পড়ুনঃ MM Kit এর কাজ খাওয়ার নিয়ম ও দাম

সেটি জমা দিতে পাররেন অথবা বাংলাদেশের এজেন্সি কিংবা দালালের মাধ্যমেও এটি পূরণ করে জমা দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাদেরকে সকল তথ্য জানিয়ে দিতে হবে এবং সকল কাগজপত্র কপি প্রদান করতে হবে। এভাবেই অফলাইনে অথবা অনলাইনে এই আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন ফর্ম পুরন করার নিয়ম

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনায় এখন আমরা জানবো অনলাইনে এই আবেদন ফর্ম কিভাবে পুরন করতে হয় সে সম্পর্কে। অনলাইনে এই আবেদন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সরকাররি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ টাফনিল এর কাজ খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা

আপনি যদি নিজে অনলাইনে এই আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকেও ঔ ওয়েবসাইটে ঢুকে ফর্ম পুরন করতে হবে।  আবার এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমেও অনলাইনে ফর্ম পুরন করে নিতে পারবেন।

ভিসা করতে কত টাকা বা কত ফি লাগে

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনায় এখন আমরা জানবো ভিসা করতে কত টাকা লাগে বা কত ফি লাগে সে সম্পর্কে। কেউ যদি এই আবেদন করতে চান তাহলে তাকে খরচ সম্পর্ক অবশ্যই অবগত থাকতে হবে। বিভিন্ন দেশের ভিসা করার জন্য বিভিন্ন রকমের খরচ হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে করণীয় কি

ভিসার প্রকারের উপর নির্ভর করেও খরচ কম-বেশি হতে পারে। এছাড়াও  দালাল বা এজেন্সির উপর নির্ভর করেও ভিসার খরচ কম-বেশি হয়ে থাকে। উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে বলা যেতে পারে ভিসার খরচ নির্ধারিত নয়। সরকারিভাবে ভিসা করলে খরচ কম হয়।

ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার বা ইন্টারভিউ

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই শিরোনাম আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার বা ইন্টারভিউ সম্পর্কে। কোন কোন দেশ ভিসা অনুমোদনের পূর্বে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে নিজ দেশে অবস্থিত উক্ত দেশের দূতাবাসে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে ইন্টারভিউ বা সাক্ষাৎকার দিতে হয়।

ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার বা ইন্টারভিউসাক্ষাৎকারে সাধারণত যে বিষয়গুলো জানতে চাওয়া হয় সেগুলো হলো আপনি কেন বিদেশ যাবেন? বিদেশে গিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি? ব্যাংক সলভেন্সি বা লেনদেন কেমন? ও কিছু সাধারণ বিষয়। বলা যেতে পারে এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রার্থীর মোটিভ যাচাই করা হয়।

ভিসা পেতে কত দিন লাগে 

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনায় আমরা এখন জানবো ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে। বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের সময় গুনতে হয়। দেশ অনুসারে ভিসা হাতে পাওয়ার সময় বিভিন্ন রকমের হয়। ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে তার একটা ধারনা নিম্নে প্রদান করা হলো।

  • ভারতের ভিসা পেতে সময় লাগে ৭ থেকে ২১ দিন।
  • মিশরের ভিসা পেতে সময় লাগে ১০ থেকে ২১ দিন।
  • দুবাইয়ের ভিসা পেতে সময় লাগে ৫ থেকে ৭ দিন।
  • তুর্কি ভিসা পেলে সময় লাগে ১০ থেকে ২১ দিন।
  • উজবেকিস্তানের ভিসা পেতে সময় লাগে ৫ থেকে ৭ দিন।
  • থাইল্যান্ডের ভিসা পেতে সময় লাগে ৫ থেকে ১০ দিন।
  • সিঙ্গাপুরের ভিসা পেতে সময় লাগে ১৫ থেকে ৩০ দিন।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে সময় লাগে  ২১ থেকে ৩৭ দিন।

এছাড়াও আরো অনেক দেশে রয়েছে যে দেশের ভিসা পেতে  বিভিন্ন মেয়াদে সময় লেগে থাকে।

ভিসা সংগ্রহ করার নিয়ম

ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কাগজপত্র লাগে এই আলোচনার সব শেষ ধাপ ভিসা সংগ্রহ করার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করবো। উপরে উল্লেখিত ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হলে আপনাকে ভিসা প্রদান করার জন্য মনোনয়ন করা হবে।

ভিসা প্রসেসিং পরিপুর্ণ ভাবে সফল হলে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে আপনাকে মোবাইল ফোনে মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। মোবাইল ফোনে মেসেজের তথ্য অনুসারে আপনাকে স্ব-শরিরে উপস্থিতি হয়ে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।

লেখক এর মতামত

যেহেতু ভিসা প্রসেসিং একটা জটিল বিষয়! তাই এর প্রত্যেকটা ধাপ খুব সুন্দর ভাবে নিখুঁত করে সম্পন্ন করতে হয়। যদি আপনি একা না পারেন বা না বুঝেন তাহলে অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নিয়ে ত্রুটিমুক্ত করে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন। সর্বদা সঠিক তথ্য দিয়ে ভিসা প্রসেসিং কাজগুলোকে সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করবেন।

আমার বিশ্বাস এই পোস্টটি পড়ে আপনি এতক্ষণে জেনে গেছেন এই আবেদন কিভাবে করতে হয় ও কি কি কাগজ কাগজপত্র লাগে। এই পোস্টটি পড়ে নিশ্চই আপনি উপকৃত হয়েছেন তাই সবাইকে শেয়ার করুন। কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। বিদায় বেলা আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url