মহররমের তাৎপর্য ও আশুরার মাহাত্ম্য এবং ১০ মহররমের ২০ ঘটনা
মহররমের তাৎপর্য ও আশুরার মাহাত্ম্য এবং ১০ মহররমের ২০ ঘটনা পর্যালোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই যে বিষয়টি সামনে আসে তা হল মহররম। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই এই মহররম মাস বিভিন্ন ঐতিহ্য বিজড়িত হয়ে আছে। বিশেষ করে কারবালার ঘটনার প্রেক্ষিতে মহররম মাস আরো বেশি স্মরণীয় হয়ে আছে ইসলামের ইতিহাসের পাতায়।
মহররমের তাৎপর্য, আশুরার মাহাত্ম্য ও ১০ই মহরমের দিনে ঘটে যাওয়া ২০টি উল্লেখযোগ্য ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ুন। আজকের এই লেখাটি পুরোপুরি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন পবিত্র মহররম কি? পবিত্র আশুরা কি? মহররম ও আশুরার বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ ও পবিত্র আশুরায় করণীয় সম্পর্কে।
আশুরা সম্পর্কে যা পড়তে চান
মহররম কি ও পরিচিতি
মহররম আরবি সনের প্রথম মাসের নাম। মহররম আরবি শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো সম্মানিত। ইসলামের ইতিহাস থেকে পাওয়া যায় এই মাসে ইসলামের অনেক স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা ঘটেছে। এই স্মৃতিগুলোর সম্মানার্থে এই মাসকে মহররম বা সম্মানিত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
হযরত ওমর (রাঃ) এর খেলাফতকালে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর হিজরতের বছরকে প্রথম বছর ধরে আরবি তথা হিজরী সনের গণনা শুরু হয়। আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২, এর মধ্যে চারটি মাস ( মহররম, রজব, জিলকদ ও জিলহজ্জ) সম্মানিত। মহররম মাসকে 'শাহরুল্লাহ' বা 'আল্লাহর মাস' বলা হয়েছে।
মুসলমানদের সকল প্রকার ইবাদত বন্দেগী ও ধর্মীয় বিধি-নিষেধ সবকিছুই চান্দ্র তারিখ দেখে পালন করা হয়ে থাকে। সেজন্য সঠিক সময়ে বা দিনক্ষণে এবাদত বন্দেগী করার জন্য চান্দ্র মাসের তারিখ চর্চায় থাকা প্রয়োজন।
২০২৪ সালে মহররম মাস কবে
হিজরী বর্ষপঞ্জি মূলতঃ একটি চন্দ্র পঞ্জিকা। এই বর্ষপঞ্জির মাস গুলো শুরু হয় যখন নতুন চন্দ্র (চাঁদ) দৃশ্যমান হয়। পক্ষান্তরে সৌর পঞ্জিকা বা ইংরেজি বর্ষ গণনা শুরু হয় চন্দ্র পঞ্জিকা বা হিজরী বর্ষ অপেক্ষা ১১ থেকে ১২ দিন পরে। নিম্নে মহররম মাসের ক্যালেন্ডার প্রদান করা হলো যেখানে ইংরেজি বাংলা ও হিজরী সনের দিন তারিখ উল্লেখ আছে।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা ও সতর্কতা।
July 2024
ফাল্গুন - চৈত্র ১৪৩০, জিলহজ্জ ১৪৪৫ - মহররম ১৪৪৬
sun |
mon |
tue |
wed |
thu |
fri |
sat |
|
১৭ 1 ২৪ |
১৮ 2 ২৫ |
১৯ 3 ২৬ |
২০ 4 ২৭ |
২১ 5 ২৮ |
২২ 6 ২৯ |
২৩ 7 ৩০ |
২৪ 8 ১ |
২৫ 9 ২ |
২৬ 10 ৩ |
২৭ 11 ৪ |
২৮ 12 ৫ |
২৯ 13 ৬ |
৩০ 14 ৭ |
৩১ 15 ৮ |
১ 16 ৯ |
২ 17 ১০ |
৩ 18 ১১ |
৪ 19 ১২ |
৫ 20 ১৩ |
৬ 21 ১৪ |
৭ 22 ১৫ |
৮ 23 ১৬ |
৯ 24 ১৭ |
১০ 25 ১৮ |
১১ 26 ১৯ |
১২ 27 ২০ |
১৩ 28 ২১ |
১৪ 29 ২২ |
১৫ 30 ২৩ |
১৬ 31 ২৪ |
|
|
|
চন্দ্র পঞ্জিকা ও সৌর পঞ্জিকার দিনের কম-বেশি হওয়ার কারণে মহররম মাসটির শুরু প্রতি ইংরেজি বছরে একই দিনে মিলে না। বারোটি চন্দ্র মাসের উপর ভিত্তি করে আরবী ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৪ সালের মহররম মাস শুরু হবে ৮ জুলাই ( ১ মহররম ) থেকে ও শেষ হবে ৫ আগষ্ট (২৯ মহররম )।
মহররমের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য
মহররম মাস হিজরী সনের ১২টি চন্দ্র মাসের মধ্যে অন্যতম পবিত্র মাস। মহান রাব্বুল আলামিন এর দয়া ও কৃপা পাওয়ার জন্য মহররম মাসকে সবচাইতে পবিত্র মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই মাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ইসলামিক ঘটনাগুলো এক একটি মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য বহন করে।
আরো পড়ুনঃ কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত?
এই মাসের প্রতিদিন নিয়মিত কোরআন পড়া, সালাত আদায় করা, দান - ছদকা করা, রোজা রাখা ও অন্যান্য এবাদত বন্দেগী করার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভ করা যায় ও ক্ষমা পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়।
আশুরা কি ও পরিচিতি
আশুরা আরবি শব্দ। এই আশুরা শব্দের আভিধানিক অর্থ স্মরণীয় দিবস অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে একটি স্মরণীয় দিন বা দিবস। আক্ষরিকভাবে আশুরা শব্দের সেমেটিয় ভাষায় অর্থ হল 'দশম দিন'। তাই বলা যায় স্মরণীয় দশম দিন। এই স্মরণীয় দিবসটি প্রতিবছর হিজরী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররমের ১0 তারিখে ঘটে থাকে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দৈহিত্র ওহযরত আলী (রাঃ) এর পুত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবারর প্রান্তরে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শাহাদাত বরণ করেন এই মহররম মাসের ১০ তারিখে। এছাড়াও আরো অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য ইসলামিক ঘটনার কারণে এই মাসটি ইসলাম ও মুসলিম ইতিহাসে অনেক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে।
পবিত্র আশুরা ২০২৪ সালে কবে
পবিত্র আশুরার দিনটি নির্ভর করে চন্দ্র মাসের দিন- তারিখ গণনার উপরে। হিজরী মাসের দিন তারিখ কম-বেশির কারণে পবিত্র আশুরার দিনটি অর্থাৎ ১০ই মহরম দিনটি আগে-পরে হতে পারে। বলা যেতে পারে প্রতিবছর একই তারিখে আশুরা পালিত হয় না। বাংলাদেশে ২০২৪ ইংরেজি সনের ১৭ই জুলাই ও ১৪৪৬ হিজরী সনের ১০ই মহরম তারিখ পবিত্র আশুরা পালিত হবে।
আশুরা পালন করার কারণ কি
পবিত্র আশুরা বা ১০ই মহররম দিনটি পালিত হয় মূলতঃ ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তার সঙ্গীদের শাহাদাতের স্মরণে। ইসলামের ইতিহাসে মহররম মাসের ১০ তারিখে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে সবচাইতে হৃদয় বিদারক, করুন ও বেদনাদায়ক ঘটনাগুলোর একটি হলো হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তার সঙ্গীদের কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ।
আরো পড়ুনঃ অর্থসহ ছেলে শিশুর ইসলামিক নামের তালিকা।
নবী কুলের শিরোমনি আল্লাহর পিয়ারে হাবিব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় নাতি হযরত হোসাইন (রাঃ) এর এই শোকাবহ ঘটনার স্মরণে পালিত হয় পবিত্র আশুরা ও তাঁকে জানানো হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি। পবিত্র আশুরা পালনের মাধ্যমে হযরত হোসাইন (রাঃ) 'র প্রতি গোটা মুসলিম উম্মাহ গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করে থাকেন।
আশুরার মাহাত্ম্য ও মানবিক মূল্যবোধ
আশুরার দিন শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে মানবজাতির মাহাত্ম্য ও মানবিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করে। পবিত্র আশুরা শুধু হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) ও তার সঙ্গীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশের দিন নয় বরং এটি নিগৃহীত ও নিপীড়িত মানুষের প্রতি সমবেদন প্রকাশেরও দিন।
আরো পড়ুনঃ অর্থসহ মেয়ে বাচ্চাদের ইসলামিক নামের তালিকা ও ইংরেজী বানান।
ইমাম হোসেন (রাঃ) ও তার সঙ্গীরা অন্যায়ের বিপক্ষে সত্য ও ন্যায়ের যুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, এই উৎসর্গ পুরা মানবজাতিকে সত্য ও আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। পবিত্র আশুরা বা মহররম পালনের উদ্দেশ্যে মসজিদে মসজিদে বা পাড়া মহল্লায় মজলিস বা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
উক্ত মজলিস বা অনুষ্ঠানে অনেক ধর্মাপাণ মুসল্লিরা একত্রিত হন ও তাদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ ও ঐক্যবদ্ধতা বৃদ্ধি পায়। পবিত্র আশুরার দিন অভাবী ও দরিদ্র জনতার মাঝে সাহায্য করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
আশুরার দিন বা ১০ তারিখের উল্লেখযোগ্য ২০ টি ঘটনা
পবিত্র আশুরা বা ১০ই মহররম! আসমান জমিন সৃষ্টিসহ পৃথিবীর মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক যুগান্তকারী বা স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছিল মহররম মাসের এই দশ তারিখে। মহররম মাসের পবিত্র আশুরার দিনে ঘটে যাওয়া অনেক গুলো ঘটনার মধ্যে থেকে আশুরা সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি সংক্ষিপ্ত ভাবে নিম্ন তুলে ধরা হলো।
পবিত্র আশুরা বা ১০ই মহররমের দিনে আল্লাহ তায়ালা
- ১. আসমান-জমিন ও পাহাড়-পর্বতসহ অনেক কিছু সৃষ্টি করেন।
- ২.এই দিনে আদি মানব হযরত আদম (আঃ ) কে সৃষ্টি করেন।
- ৩. হযরত সোলাইমান (আঃ) কে পৃথিবীর রাজত্ব দান করেন।
- ৪. ১০ই মহররম তারিখে হযরত ঈসা (আঃ) এর পৃথিবীতে আগমন এবং জীবিত অবস্থায় আসমানে উত্তোলন।
- ৫. নূহ (আঃ) মহাপ্লাবন শেষে যুদি পাহাড়ে অবতরণ করেন।
আরো পড়ুনঃ চিয়া সিডের পুষ্টিগণ উপকারিতা খাওয়ার নিয়ম ও দাম।
- ৬. হযরত আইয়ুব (আঃ) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করেন।
- ৭. মহান রাব্বুল আলামিন হযরত ইদ্রিস (আঃ) কে আসমানে উত্তোলন করেন এই তারিখে।
- ৮. হযরত ইব্রাহিম (আঃ) নমরুদের প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি লাভ করেন।
- ৯. হযরত মূসা (আঃ) মহররমের এই দিনে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি পান।
- ১০. হযরত ইউনুস (আঃ) চল্লিশ দিন মাছের পেটে জীবিত থাকার পরে দজলা নদীতে মাছের পেট থেকে উদ্ধার হন।
- ১১. মাদায়েন ও কাদিশিয়ার যুদ্ধে মুসলিমদের জয়লাভ এই ১০ তারিখে।
- ১২.আল্লাহ পাক হযরত দাউদ ( আঃ ) কে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেন।
- ১৩. খাইবারের যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় অর্জিত হয় এই ১০ তারিখে।
- ১৪.হযরত আদম (আঃ) কে জান্নাত থেকে দুনিয়াতে প্রেরণ। গুনা মার্জনার পরে হাওয়া (আঃ) র সাথে তাঁর পুনরায় সাক্ষাৎ লাভ।
- ১৫. হযরত আদম (আঃ) কে জান্নাতে প্রেরণ করান এই পবিত্র আশুরার দিনে।
- ১৬. হারানো সন্তান হযরত ইউসুফ (আঃ) এর সাথে পিতা হযরত ইয়াকুব (আঃ) সাক্ষাৎ গ্রহণ
- ১৭. হযরত নূহ (আঃ) কে প্রবল তুষার ও প্লাবন থেকে পরিত্রান প্রদান করেন এই দিনে।
- ১৮. এই ১০ তারিখে হারানো বাদশাহী ফিরিয়ে পান হযরত সোলায়মান (আঃ)।
- ১৯. নবী কুলের শিরোমণি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিজরত করে মক্কা থেকে মদিনায় গমন।
- ২০. আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রিয় নাতি ,হযরত আলী (রাঃ) এর পুত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর ৭৭ জন ঘনিষ্ঠ সাহাবী কারবালার প্রান্তরে শাসক ইয়াজিদের সৈন্যদের দ্বারা নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন এই পবিত্র আশুরার দিন বা ১০ই মহররম তারিখে।
আশুরার রোজা কয়টি
মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় আগমন করে নবী করীম (সাঃ) আশুরার দিন অর্থাৎ মহরমের ১০ তারিখ ইহুদীদের রোজা রাখতেন দেখলেন। পবিত্র আশুরার দিনে আল্লাহ তায়ালা মুসা (আঃ ) কে রক্ষা করেছিলেন ও ফেরাউনের লোকদের লোহিত সাগরের ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। এই দিনটিকে একটি মহান দিন মনে করে ইহুদীরা রোজা রাখতেন।
অপরদিকে মুসা (আঃ) আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা নিদর্শন হিসেবে এই দিনে রোজা পালন করেছিলেন। প্রিয় নবী (সাঃ) বললেন আমি ইহুদীদের চেয়ে মুসা (আঃ) এর নিকটবর্তী। তাই ১০ মহররম তারিখে তিনি নিজেও রোজা পালন করলেন ও মুসলমানদেরকে রোজা পালন করার নির্দেশ দিলেন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে হাদিসে বর্ণিত আছে সাহাবীরা অবাক হয়ে বললেন হে আল্লাহর রাসূল ইহুদিরাতো এই দিনটিকে মহান দিন মনে করে রোজা পালন করে। এই দিনে ইহুদিরাও রোজা পালন করে,
আবার আমরাও যদি এই দিনে রোজা পালন করি তাহলেতো তাদের সাথে সামঞ্জস্য হয়ে যাবে। তাদের প্রশ্ন যেভাবে নবীজি(সাঃ) বললেন তারা যেহেতু এই দিন একটি রোজা রাখে, আগামী বছর আমরা ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে ২ দিন রোজা রাখবো ইন-শা-আল্লাহ্।
অন্য একটি হাদিসের বর্ণনায় এসেছে নবীজি (সাঃ) বলেন তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখো তবে এক্ষেত্রে ইহুদীদের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য ১০ মহররম তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরো একটি রোজা রাখো। হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রমাণিত যে পবিত্র আশুরার রোজা রাখতে হবে ২টি।
সেটি হল মহরমের ১০ তারিখ ( ১৭ জুলাই) বুধবার ১টি আর এর আগের দিন অর্থাৎ মহরমের ৯ তারিখ ( ১৬ জুলাই) মঙ্গলবার ১টি অথবা ১০ মহররমের পরের দিন অর্থাৎ মহররমের ১১ তারিখ (১৮ জুলাই) বৃহস্পতিবার ১টি মোট ২টি। অর্থাৎ পবিত্র আশুরার রোজা সর্বমোট ২ (দুই) টি।
আশুরার দিন মুসলমানদের যা যা করনীয়
- রোজাঃ দশেই মহরমোসহ মহররমের আগের দিন অথবা পরের দিন মিলিয়ে দুইটি রোজা রাখা উত্তম।
- ইসলামী আলোচনাঃ ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তার সঙ্গীদের স্মরণে শোকসভা বা শোক প্রকাশের জন্য ইসলামিক আলোচনার ব্যবস্থা করা হয় এবং ইমাম হোসাইন ও তাঁর সঙ্গীতা প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।
- দান-খয়রাতঃ দরিদ্র ও অভাবী মুসলমানদের মধ্যে দান খয়রাত করা হয়।
- ইবাদতঃ আশুরার দিনে বেশি বেশি ইবাদত করা হয়।
- তাজিয়া ও শোকযাত্রাঃ হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সংগীতের সমাধিস্থলের আদলে তাজিয়া তৈরি করা হয়। এই তাজিয়া শোক যাত্রায় বহন করা হয়। শোকযাত্রায় মুসলমানেরা শোকাকুল পরিবেশে হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায়।
- দুঃখ-কষ্টের স্মরনেঃ পবিত্র আশুরা বা ১০ই মহররম দিনটি শুধু ইমাম হোসাইন রাজিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ও তাঁর সঙ্গীদের সাহাদাতের স্মরণে পালিত হয় না বরং এটি সকল মুসলিম উম্মার বিভিন্ন নিপীড়িত ও শহীদদের প্রতি সমবেদনা জানানোরও দিন।
লেখকের কথা
মহররমের তাৎপর্য ও আশুরার মাহাত্ম্য আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন হাদিসের ব্যাখ্যা থেকে এটি প্রতিয়মান হয় যে আরবি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস এই মহররম মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আল্লাহর কাছে অনেক বেশি। সব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী এই মহররম মাসের ১০ তারিখেই অর্থাৎ পবিত্র আশুরার দিনে সংঘঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটা উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর মাধ্যমে মানব সম্প্রদায়কে এক একটি বার্তা প্রদান করা হয়েছে।
পবিত্র আশুরার দিনটি ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল। ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তার সঙ্গীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শাহাদাত বরণের একটি নিদর্শন। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা পবিত্র আশুরা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। আশা করি আজকের এই পোস্টেটি আপনি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করে দিবেন।
Mashallah....