কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি এখন ভাবছেন? সারা জীবন কলা খেলেন কিন্তু এর সম্পর্কে অনেক তথ্যই ছিল অজানা! এই অজানা তথ্যগুলো জানানোর জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি লিখতে বসেছি। কলা চিনেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই কলা চিনেন। বেশিরভাগ কলা পাঁকলে হলুদ রং ধারণ করে আবার কলা পাঁকলেও কাঁচার মত সবুজ রঙেরই থাকে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজলভ্য ও সস্তা ফলগুলো মধ্যে অন্যতম হলো কলা। গ্রাম অঞ্চলে প্রায় সব বাড়িতেই কলার গাছ রয়েছে ফলে এই ফলগুলো সব সময় নিয়মিত খাওয়ার সুযোগ হয়ে থাকে। এই ফলগুলো দামে অনেক সস্তা কিন্তু পুষ্টিগুনে অনেক মূল্যবান। এই ফলগুলো কাঁচা পাকা দুই রকমই খাওয়া যায় এছাড়াও এর এ্যাটে বা ভূরা ও কলার মোচাও রান্না করে খাওয়া যায়।
পেজ সূচীপত্র
কলার রকমভেদ বা জাত
কলা বিভিন্ন রকমের বা বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। কলার জাতের ভিন্নতার কারণে এর উপকারিতারও কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। কলার অনেকগুলো জাতের মধ্যে সচরাচর আমাদের দেশে
যেসকল জাতের কলা পাওয়া যায় সেই জাতের কিছু বলার নাম উল্লেখ করা হলো। উল্লেখ্য যে অঞ্চল ভেদে এই কলাগুলোর নামও আলাদা আলাদা হতে পারে।
আরো পড়ুন: অর্থসহ মেয়ে বাচ্চাদের ইসলামিক নাম
- বিচি কলা বা বিচা কলা।
- সবরি কলা বা মানিক কলা বা অনুপম কলা।
- এটে কলা বা আঁটিয়া কলা বা আনাজি কলা বা তরকারি খাওয়া কলা।
- চাপা কলা বা চাম্পা কলা।
- জ্বিন কলা ( ছোট জ্বীন কলা বড় জ্বীন কলা)।
- সিঙ্গাপুরি কলা।
- সাগর কলা।
কলার পুষ্টিমান
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত আলচনায় এখন জানবো কলার পুষ্টিমান সম্পর্কে। দেশের প্রেক্ষাপটে কলা হলো সবচাইতে সহজলভ্য একটি ফল কিন্তু এর পুষ্টিগুণ খুবই দুর্লভ। এটি এমন একটি ফল যা পুষ্টিগুণে ভরপুর। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি এর কিছু ঔষধি গুণাবলী রয়েছে।
বিশ্বের একমাত্র ফল যাতে সব ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়। এছাড়াও কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালরি, খনিজ পদার্থ, ফাইবার বা আঁশ , আয়রন, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান। কাঁচা কলা বা পাকা কলা সব ধরনের কলার মধ্যেই এই ভিটামিন গুলো পাওয়া যায়।
এতগুলো পুষ্টিগুনের কারণে কলাকে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কলার ভিন্নতার উপরে এতে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন পাওয়া যায় যেমন কাঁচা কলায় এক ধরনের ভিটামিন ও পাকা কলায় আরেক ধরনের ভিটামিন।কোন ধরনের কলায় কি রকম ভিটামিন পাওয়া যায় তা নিম্ন আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুন: লটকন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁচা কলায় বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় প্রবায়োটিক।
- সামান্য পাকা কলায় ফাইবার ও চিনি বেশি পাওয়া যায়।
- পাকা কলায় বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
- কলা বেশি পেকে গেলে তাতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
- অতিরিক্ত পাকা কলায় ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান পাওয়া যায়।
কলা কখন খাওয়া উচিত
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা শিরোনামে এখন আমরা জানবো কলা কখন খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে। কলা খাওয়ার সময় নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। অর্থাৎ কোন সময়ে কলা খাওয়া উচিত বা কোন সময় কলা খাওয়া উচিত নয় বা কখন কলা খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। সত্যি কার অর্থে কলা খাওয়ার কোন নির্ধারিত টাইম নেই।
আরো পড়ুনঃ ২০২৪ সালের ক্যালেন্ডার ও সরকারি ছুটির তালিকা
তবে কলা খাওয়ার সময় কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে ভালো হয়। বিভিন্ন পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে সকালে কলা খাওয়া ভালো। তবে সকালে নাস্তা খাওয়ার পরে অথবা রাস্তার সাথে কলা খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। কোন অবস্থাতেই খালি পেটে কলা খাওয়া উচিত নয়। সকালে কলা খেলে সারাদিন ধরে উপকার পাওয়া যায়।
রাতে কলা খাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনায় এখন আলোচনা করবো রাতে কলা খাওয়া সম্পর্কে। কলা খাওয়া নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। দিনে রাতে যে কোন সময় কলা খাওয়া যেতে পারে।পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মধ্যে কলা একটি ঠান্ডা ফল।
তাই যে সকল লোকদের ঠান্ডা জনিত রোগ অর্থাৎ এলার্জি, সর্দি, এ্যাজমা ও হাঁপানি জাতীয় রোগ রয়েছে তাদের রাতের বেলায় কলা না খাওয়াই উত্তম। অনেকেরই কলা খেলে এসিডিটি বেড়ে যায় তাই রাতের বেলা কলা পরিহার করা উচিত। যারা সুস্থ মানুষ তারা রাতের বেলাও খেতে পারবেন।
কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা শিরোনামে এখন আলোচনা করবো কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। কলা হলো এমন একটি ফল যা অত্যন্ত পুষ্টিকর, সহজলভ্য ও দামে খুবই সস্তা। এই ফল যেমনি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ, তেমনি রয়েছে ঔষধিগুণ। পাকা বা কাঁচা দুরকম কলাই খাওয়ার উপকারিতা আছে ।
এখন আমরা আলোচনা করব পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতাগুলো। পরের স্টেপে জানতে পারবেন কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখি পাকা কলার কি কি উপকারিতা রয়েছে।
ভিটামিনের ঘাটতি পুরন করে কলা
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আলোচনায় এখন জানবো ভিটামিনের ঘাটতি পুরন করে কলা এ সম্পর্কে। সুপারফুড খ্যাত কলায় রয়েছে সব ধরনের ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রণ, জিংক, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এছাড়াও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাইরোডক্সিন (বি৬)।
গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ খুব দ্রুত শরীরে এলার্জি সাপ্লাই করে। এতগুলো ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার একসঙ্গে একটি ফলে থাকার কারণে শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে ও বাড়তি শক্তি যোগায়। তাই রসিকতা করে কলাকে পাওয়ার হাউজ বলা হয়ে থাকে।
পেশীর গঠন ও শক্তিবর্ধন করে কলা
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনায় এখন দেখবো পেশী গঠনে কলার ভূমিকা কি? পেশীর গঠন ও শারীরিক শক্তি বর্ধনে কলা এক অতুলনীয় ফল। এই ফলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও কার্বহাইড্রেট। চলাফেরা বা হাঁটাহাঁটি কিম্বা শারীরিক ব্যায়াম করার সময় মাসলগুলো ক্রাম্প হয়।
আরো পরুনঃ শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা কি
কলাতে বিদ্যমান পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম এই মাসল ক্যাম্প হওয়া থেকে রোধ করে। কার্বোহাইড্রেট ইনস্ট্যান্ট বডিতে শক্তি যোগায়। প্রতিদিন নিয়মিত কলা খেলে শরীরের শক্তি বর্ধন করে ও পেশীগুলোকে মজবুত রাখে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুটো করে কলা খাওয়া উচিত।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে কলা
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কলা অনেক কার্যকরী একটা ফল। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। ও অন্য একটা উপকারিতা হলো বডি মাসেলগুলোকে মজবুত করার পাশপাশি হার্টের মাসলগুলোকে স্ট্রেনদেন করে । মানবদেহের একমাত্র অঙ্গ হার্ট যা নিয়ে
আরো পড়ুন: ঘরে বসে অনলাইনে ইনকামের ১০টি সহজে উপায়।
কোন সময় রেস্ট নেয় না।এজন্য হাটে-মাসলগুলো অন্যরকম মজবুত হয়। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। এই হার্ট সবসময় ব্লাড পাম্প করার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ - প্রত্যঙ্গে ব্লাড সাপ্লাই করে থাকে। নিয়মিত কমপক্ষে দুটি করে কলা খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা কমায় কলা
অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা কমাতে কলা কার্যকরী ভূমিকা রাখে। রক্তের মধ্যে যখন হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় তখন তাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়। কলাতে বিদ্যমান পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন রক্তশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া। সেজন্য নিয়মিত কলা খেলে আয়রণ ডিফেসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কলাতে স্টেরল নামক আরো একটি যৌগ রয়েছে যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে সহায়তা করে কলা
ওজন কমাতে সহায়তা করে কলা।কলা এমন একটা কল যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা তন্তু বা আঁশ ও শর্করা। আঁশ বা ফাইবার সমৃদ্ধ কলা খেলে অনেক সময় ধরে পাকস্থলীতে থাকে এবং মনে হয় পেট ভরা ভরা আছে এতে করে খুব বেশি পরিমাণে ক্ষুধা লাগে না ও খাওয়া কম লাগ।অতিরিক্ত খাওয়ার প্রয়োজন হয় না ফলে ওজন বাড়তে পারে না।
কলা পরিপাক তন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়
কলা পরিপাক তন্ত্রের কার্যকারিতা কিভাবে বাড়ায় এখানে জেনে নিন। কলাতে রয়েছে প্রবায়োটিক ফাইবার। এই প্রবারোটিক ফাইবারগুলো স্মল ইনভেস্টাইন বা অন্ত্রে অবস্থিত মাইক্রোবিয়াল ফ্লোরার খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও এ ফলে রয়েছে এক ধরনের স্টার্স যা পরিপাক না হয়ে লার্জ ইনস্টিটাইন বা বৃহদান্তে গিয়েও অবমুক্ত হয় ও মাইক্রোবীয়াল ফ্লোরার খাদ্য পরিণত হয়।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোন ব্যবহারে বাচ্চাদের কি কি ক্ষতি করে?
ফাইবার যুক্ত কলা আমাদের খাদ্য হজমেও সহায়তা করে করা খাবার হল সহায়তা করে এতে করে আমাদের পরিপাকতন্ত্র বিশেষ করে স্মল ইন্টিসস্টাইন ও লার্জ ইনতেস্টাইন আরো মজবুত হয়। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম,পটাশিয়াম ও মিনারেলস বের হয়ে যায়। সোডিয়াম, পোটাসিয়াম ও মিনারেলস এর ঘাটতি পূরণের কলার জুড়ি নাই।
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমায়
নিয়মিত কলা খেলে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমে যায়। কলাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে এর পাশাপাশি ডোপামিন নামক একধরনের নিউরোট্রান্সমিটার রয়েছে যা মস্তিষ্কের আনন্দের অনুভূতি এনে দেয় যারফলে আমাদের মানোসিক চাপ বা স্ট্রেস কমতে সহায়তা করে।
চোখের স্বাস্থ্য ও ত্বক ভালো করে কলা
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনায় এখন জানব চোখ ও ত্বকের গঠনে কলার ভূমিকা সম্পর্কে। চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল হলো কলা। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ।
যা আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখে। পুষ্টিবিদ মতে কলাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি। এই তিনটি উপাদার মিলে মানব ত্বকের সমস্যা দূর করে ও এজিং ফ্যাক্টর কে প্রতিরোধ করে।
কাঁচা কলার উপকারিতা
কলার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে উপরে আলোচনায় জেনেছি। কাঁচা ও পাকা উভয় ধরনের কলাতেই উপকার পাওয়া যায়। বলতে গেলে কাঁচা কলা ও পাকা কলাতে প্রায় একই ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায় তবে খাওয়ার ধরনটা আলাদা। কাঁচা কলাগুলো মূলত সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে। এটি দুইভাবে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। একটা সবজি হিসেবে আরেকটি হল ভর্তা করে।
সহজলভ্য এই সবজিটিতে কাঁচা অবস্থায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন এ, ফসপেট ,ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও প্রোবায়োটিক পাওয়া যায় ।কাঁচাকলার তরকারি বা ভর্তা অনেক উপকারী। নিম্নে কাঁচা কলার উপকারিতাগুলো আলোচনা করা হলো।
- রোগীর পথ্য হিসেবে কাঁচা কলার ঝোল অনেক উপকারী। এতে বিদ্যমান আয়রন খুব দ্রুত শরীরে রক্ত অভাব পূরণ করে।
- কাঁচা কলার ভর্তা বা ঝোল ডাইরিয়ার রোগীদের খুব ভালো পথ্য। এতে প্রদত্ত প্রবায়োটিক খুব তাড়াতাড়ি পেটের পীড়াগুলো উপশম করে।
- সদপ্রশুত দুগ্ধ দানকারী মায়েরা কাঁচা কলা ঝোল খেলে সহজে বুকের দুধ বৃদ্ধি পায় ফলে বাচ্চারা পর্যাপ্ত দুধ পায়।
- কাঁচা কলা রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা খুব সহজে হজম হয় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- কাঁচা কলায় বিদ্যমান ভিটামিন বি৬ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহায়তা করে।
- কাঁচা কলা আঁশযুক্ত হওয়ায় এর ভর্তা বা তরকারি অনেক সময় ধরে পেটে থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে এত করে খাওয়ার প্রবণতা কমে ও ওজন হ্রাসের সম্ভাবনা থাকে।
কোন ধরনের কলার কি উপকারিতা
যে কলাগুলো আমরা সাধারণত খেয়ে থাকি তার প্রায় সবগুলোতেই একই ধরনের উপকারিতা রয়েছে। তবে জাতের ভিন্নতার কারণে এর উপকারিতারও কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। আবার কোন কোন জাতের কলার মধ্যে ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে। নিম্নের আলোচনায় আমরা দেখব কোন জাতের কলার কি উপকারিতা।
- বিচি কলা বা বিচা কলা: বিচি কলাগুলো খেতে খুব বেশি সুস্বাদু না হলেও এর অনেকগুলো ঔষধি গুন রয়েছে। এইকলাতে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম থাকে যা শরীরের টিস্যু গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। বিচি কলার ফুলের রস ব্রংকাইটিস নিরাময় করে। এই কলা খেলে আমাশয় ভালো হয় ও আলসারে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- সবরি কলা বা মানিক কলা বা অনুপম কলা: এ কলা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। এ কলায় বিদ্যমান এন্ট্রিঅক্সিডেন্ট টিস্যুগুলোকে সতেজ করে। এ কলা খেলে ঘুম ভালো হয় ফলে মানসিক স্ট্রেস কমে ও চর্বি হজমে সহায়তা করে।
- এটে কলা বা আঁটিয়া কলা বা আনাজি কলা বা তরকারি খাওয়া কলা: এ কলা গুলো সাধারণত তরকারির হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়।এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিক রয়েছে যা পেটের পিঁড়া দূর করতে সহায়তা করে।
- আরো পড়ুন: বিজয়ের মাস ডিসেম্বর ২০২৪
- চাপা কলা বা চাম্পা কলা: এই কলা গুলোতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ ও গ্লুকোজ থাকে যা আমাদের পেট পরিষ্কার করে এবং গ্লুকোজ মস্তিষ্ককে সচেত রাখে ও কর্মদক্ষতা বাড়ায়।
- জ্বিন কলা (ছোট জ্বীন কলা ও বড় জ্বীন কলা): এই কথাগুলোর মধ্যে অল্প পরিমাণ বিচি থাকে। এই কলা গুলোতে যথেষ্ট পরিমাণে ফ্রাক্টোজ থেকে তাই শরীরে দ্রুত এলার্জি দেয়। অল্প পাকা অবস্থায় খেলে আমাশয় ভালো হয়।
- সিঙ্গাপুরি কলা: এই কলাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন থাকে যা আয়রন ডিফিসিয়েন্সি এ্যনিমিয়া দূর করে। দেহের পানি শোষণের হার ঠিক রাখে।
- সাগর কলা: সাগর কলাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে মিউসিলেজ ও ফ্রুক্টোজ। গ্রামের লোকদের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে যে সাগর কলা খেলে সেক্স কমে ও কাশি বাড়ে। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন সাগর কলা খেলে সেক্স কমে না কাশিও বাড়ে না বরং বীর্যরশ বৃদ্ধি করে ও শুক্রাণীর খাদ্য যোগান দেয় আর মিউসিলেজ কফকে তরল করে বের করতে সহায়তা করে।
কলার অপকারিতা
কলা এমন একটি ফল যার হাজারও পুষ্টিগুণ ও ঔষধি মান রয়েছে। এই ফল সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে একটা বিষয় লক্ষ্যনিয় যে এর তেমন কোন অপকারিতা পাওয়া যায়নি। তবে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কলা খাওয়ার অপকারিতা বা সতর্কতাগুলো আলোচনা করা হলো।
- খালি পেটে কলা খাওয়া উচিত নয় এতে করে এসিডিটি বেড়ে যেতে পারে
- পাকা কলাতে প্রচুর পরিমাণ গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ থাকে। যাদের উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস আছে তাদের পাকা কলা না খাওয়া ভালো।
- পাকা কলাতে বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে এসমস্ত রোগীদের বেশি পাকা কলা খেলে রক্তের চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
- যাদের ইনসমনিয়ার সমস্যা আছে তাদের রাতের বেলায় কলা না খাওয়াই ভালো। এতে ঘুম কম হতে পারে।
লেখক এর কথা
কলার পুষ্টিগুণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্বন্ধে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এফল সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন সাথে জানতে পেরেছেন কিছু অজানা তথ্য। রোগীর পথ্য থেকে শুরু করে মানবদেহ গঠনের প্রতিটি পরতে পরতে এই ফলের কার্যকরি ভূমিকা রয়েছে।
মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়, তাই একবারে বেশি কলা না খেয়ে, নিয়ম মেনে প্রতিদিন দু-একটি করে কলা খেলে বিশদ উপকার পাবেন। এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আপডেট সব পোস্ট পাওয়ার জন্য এখনই সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। সচেতনতার সহিত সুস্থ থাকবেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url