ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম! অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবে এটাই সত্য। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন মজাদার ঝালমুড়ি বিক্রি করে কিভাবে এত টাকা ইনকাম করা যায়? ঝাল মুড়ি কিভাবে তৈরি করলে সবাই আগ্রহ সহকারে খায়। এর মশলা বা কিভাবে তৈরি করতে হয় ঝাল মুড়ি সবই থাকছে আজকের আটিকেলে।
ঝাল মুড়ি এমনই একটা মুখরোচক খাবার যা দেখলে সবারই খেতে ইচ্ছা করে। এই ঝাল মুড়ি বানানোটাই আসল ব্যাপার। যে যত মাপমত মসলা দিতে পারবে, তার ঝাল মুড়ি তত টেস্টি বা মকরোচক হবে। একবার খেলে আবার খেতে মন চাইবে। এটাই ঝাল মুড়ি বিক্রেতার টেকনিক। চলুন জেনে নিই কিভাবে ঝাল মুড়ি মাখালে মুখরোচক হবে ও অনেক বিক্রি করতে পারবেন। প্রসেস জানা থাকলে ঝাল মুড়ি বাড়িতেও বানানো যায়।
পেজ সূচিপত্র
ঝালমুড়ির মসলা বানাতে কি কি লাগে
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এই শিরোনামটি আলোচনায় যেটি সবার আগে আলোচনায় আসে সেটি হলো ঝাল মুড়ি সুস্বাদু করার জন্য এর মসলা তৈরি করার বিষয়গুলো। মুখরোচক, সুস্বাদু ও লোভনীয় করে মুড়ি খাওয়ার জন্য মসলা তৈরি করা জরুরি।
মসলা তৈরি করার জন্য নিম্নোক্ত উপাদানগুলো প্রয়োজন হয়। মসলা তৈরি করতে যে উপাদানগুলো লাগে তার পরিমাণ নির্ভর করে আপনি কি পরিমান ঝাল মুড়ির মসলা বানাবেন তার উপরে। এখানে উপাদানগুলোর পরিমাণ উল্লেখ করা হলো না, পরিমাণ নিজের মত করে নিবেন।
- আদা বাটা,
- রসুন বাটা,
- লবঙ্গ,
- দারুচিনি,
- আস্ত জিরা বা জিরার গুড়া,
- ভাজা ধনিয়ার গুড়া,
- সরিষার তেল,
- পেঁয়াজ বাটা,
- মৌরির গুড়া,
- হলুদের গুড়া,
- সয়াবিন তেল,
- ছোট এলাচ,
- বড় এলাচ,
- মরিচের গুঁড়া,
আরো পড়ুনঃ স্মার্টফোন ব্যবহারে শিশুদের কি কি ক্ষতি করে।
- কাঁচা মরিচ আস্ত,
- জয়ত্রী ফল,
- তেজপাতা,
- গরুর মাংসের মসলা (প্রয়োজনে),
- কালো ফল,
- পরিমাণ মতো লবণ,
- টেস্টি সল্ট (প্রয়োজনে),
- বিট লবণ (প্রয়োজনে),
উপরোক্ত সব উপকরণগুলো যখন পুরোপুরি জোগাড় হয়ে যাবে তখন বসে যাবেন ঝাল মুড়ির মসলা তৈরি করার জন্য চুলার পাশে। এইবার মসলা বাটাগুলো পাতিলে দিয়ে কোসাতে শুরু করুন, আস্তে আস্তে সব মসলাগুলো এর মধ্যে দিয়ে দেন।
মনে রাখবেন এই মসলা সুস্বাদু করার জন্য খাঁটি সরিষার তেল হলে বেশি ভালো হয়। এই সবগুলো একসাথে রান্নাবান্না হয়ে গেলেই তৈরি হয়ে গেল ঝাল মুড়ি মাখানোর ইয়ামি টেস্টি মসলা।
ঝালমুড়ি মাখাতে কি কি লাগে
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এই শিরোনামটি আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ঝাল মুড়ি কিভাবে মাখালে, খাওয়ার জন্য সবাই আকৃষ্ট হয় অর্থাৎ ঝাল মুড়ি মাখাতে কি কি লাগে এ বিষয় নিয়ে এখন আমরা আলোচনা করব।
মুখরোচক ঝাল মুড়ি বানাতে যে উপকরণগুলো লাগে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো। উল্লেখ যে ঝাল মুড়ি মাখাতে যে উপাকরণগুলো লাগে তার পরিমাণ নিজেই ঠিক করে নিতে হয়। উপকরণগুলো হলো -
- চিকন করে কাঁটা পেঁয়াজ,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা কাঁচামরিচ,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা আদা (প্রয়োজনে),
- অল্প করে আস্ত জিরা,
- সিদ্ধ করা ছোলা,
- সিদ্ধ করা মটর,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা টমেটো,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা শসা,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা গাজর,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা লেবু বা লেবুর রস,
- ধনেপাতা অল্প পরিমাণে,
- নারকেল কুচি কুচি (প্রয়োজনে),
- চানাচুর (প্রয়োজনে),
- ঝাল মুড়ির মসলা (প্রয়োজনে),
- টুকরো টুকরো আলু সিদ্ধ,
- সরিষার তেল,
- পরিমাণ মতো লবণ বা বিট লবণ,
আরো পড়ুনঃ রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম ও পুষ্টিগুণ।
- মুড়ি,
- ঝাল মুড়ি মাখানোর মসলা (প্রয়োজনে),
- অল্প পরিমাণে আচারের তেল দিলে ভালো হয়।
এইবার সবগুলো একসাথে বড় পাতিলে ভালো করে মিক্সচার করে নিলেই তৈরি হয়ে গেল ঝাল মুড়ি মাখানো। প্রত্যেককে পরিবেশন করার সময় প্লেটে সাজিয়ে দিন।
ঝাল মুড়ির স্বাদ আরো বৃদ্ধি করার জন্য হালকা করে ভাঁজা তিল ছিটিয়ে দিতে পারেন। এভাবেই তৈরি করতে হয় মুখরোচক ঝাল মুড়ি। একেই বলে মাখা মুড়ি! একবার খাবেন তো আজীবন মুখে স্বাদ লেগে থাকবে।
বুট বা ছোলা বা ঘুগনি কিভাবে মাখাবেন
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এই শিরোনামটি আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ঝাল মুড়ির পাশাপাশি কিভাবে ছোলা বা বুট বা ঘুগনি মাখিয়ে বিক্রি করলে কাস্টমারকে খুশি করতে পারবেন। আপনি দোকানে দেখবেন অনেক কাস্টোমার কাঁচা বুট বা সিদ্ধ ছোলা মাখানো খেতে চাইবে।
আরো পড়ুনঃ অর্থসহ ছেলে শিশুর ইসলামিক নামের তালিকা।
সেই ক্ষেত্রে ঐ একই পদ্ধতি অবলম্বন করে ঝাল মুড়ি বিক্রির পাশাপাশি কাঁচা বুট বা সিদ্ধ ছোলা মুখরোচক মাখিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। বুট বা ছোলা মাখিয়ে বিক্রি করার জন্য যে উপকরণগুলো লাগে সেগুলো নিম্নরূপ -
- চিকন করে কাঁটা পেঁয়াজ,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা কাঁচামরিচ,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা আদা (প্রয়োজনে),
- সিদ্ধ করা ছোলা বা মটর,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা টমেটো,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা শসা,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা গাজর,
- কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা লেবু বা লেবুর রস,
- ধনেপাতা অল্প পরিমাণে,
- সরিষার তেল,
- পরিমাণ মতো লবণ বা বিট লবণ,
- ঝাল মুড়ি মাখানোর মসলা (প্রয়োজনে),
- অল্প পরিমাণে আচারের তেল দিলে ভালো হয়।
এবার সবগুলো একসাথে ভালোমত মাখিয়ে মিশিয়ে নিলেই হয়ে গেল কাঁচা বুট বা সিদ্ধ ছোলা মাখানো। এখন সুন্দর ভাবে পিরিচে বা কাগজের ঠোংগতে করে পরিবেশন করুন, দেখবেন কাস্টমার আপনার উপরে অনেক খুশি থাকবে আপনারও ব্যবসা তথা ইনকাম বেড়ে যাবে।
চটপটি কিভাবে বানাবেন
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এ সম্পর্কিত আলোচনায় আমরা এখন আলোচনা করব চটপটি কিভাবে বানাবেন সে সম্পর্কে। ঝাল মুড়ি বিক্রির পাশাপাশি ইনকাম বাড়ানোর জন্য আপনি একই দোকানে চটপটি বিক্রি করতে পারেন। এখন আমরা আপনাকে শিখাবো চটপট কিভাবে বানাবেন। চটপটি বানানোর উপকরণগুলো নিম্নরুপ -
- সিদ্ধ মটর,
- কাঁটা পেঁয়াজ,
- রসুন বাটা,
- আদা বাটা, ও
- জিরা,
আরো পড়ুনঃ MM Kit এর কাজ খাওয়ার নিয়ম ও দাম।
- তেজপাতা,
- মসলা বা ম্যাজিক মসলা,
- গরুর মাংসের মসলা (প্রয়োজনে),
- তেল,
- হলুদ,
- লবণ (প্রয়োজনমতো)
এবার সকল মসলাগুলো একসাথে কষিয়ে নিতে হবে। এরপরে সিদ্ধ করা মটর রান্না করতে হবে। এবার পিয়াজ ভালো করে ভেজে নিয়ে পাতলের মধ্যে মিশিয়ে নিতে হবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল চটপটি। সব মসলাগুলো চটপটি সাথে ভালোভাবে মিশানো হয়ে গেলে,
ঝকঝকে চকচকে বাটিতে করে চামচসহ চটপটি পরিবেশন করুন। পরিবেশন করার সময়
- টক,
- কাঁটা শসা,
- ধনেপাতা কুচি,
- কাঁটা পেয়াজ (প্রয়োজনে)
- কাঁচা মরিচের কুচি,
- সিদ্ধ ডিম কুচি কুচি করে কেটে, ইত্যাদি।
চটপটির উপরে দিয়ে দিতে হবে। হয়ে গেল সেই স্বাদযুক্ত চটপটি খাওয়া। কাস্টমার খুশি তো আপনি লাকি। মনে রাখতে হবে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার প্রত্যেকটি পণ্যের উপস্থাপন হতে হবে কাস্টমার বান্ধব, সুন্দর ও আকর্ষণীয়।
মুখরোচক পিঁয়াজু যেভাবে পরিবেশন করবেন
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এ সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জানাবো ঝাল মুড়ি বিক্রির পাশাপাশি পিঁয়াজু কিভাবে পরিবেশন করবেন বা কিভাবে বিক্রি করবেন সে সম্পর্ক।
- ব্লেন্ড করা ডাল
- পেঁয়াজ কাটা,
- কাঁচা মরিচ কাঁটা
- রসুন বাটা
- জিরা বাটা
- বাটা আদা
- লবণ পরিমাণ মতো
উপরোক্ত সবগুলো উপাদান ভালো করে একত্রে মাখিয়ে নিয়ে, ডাল বোড়া তৈরি করে গরম তেলে সিদ্ধ করলেই হয়ে গেল মুখোরোক পিঁয়াজু তৈরি। এবার কাস্টোমারের প্রয়োজনমতো গরম গরম পিঁয়াজুগুলো সুন্দর ও পরিষ্কার প্লেটে করে পরিবেশন করুন।
ঝাল মুড়ি বেঁচে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করার জন্য এগুলো প্রত্যেকটি পণ্যের সেল বাড়াতে হবে। সেল বাড়ানোর সাথে মকর অসুখ খাদ্যদ্রব্য সাধের পাশাপাশি প্রতিবছরটাও হতে হবে সুন্দর ও আকর্ষণীয়।
পিঁয়াজু পরিবেশন করার সময় একটু বিট লবণ উপরে ছিটিয়ে দিন, তার সাথে টমেটো, শসা ও গাজরের সালাত দিয়ে দিন। সুস্বাদু ও মুখরোচক পিঁয়াজু গুলোর একবার খেলে কাস্টমার আসবে বার বার। এতে করে আপনার ইনকাম বেড়ে যাবে।
ফুচকা কিভাবে বানাবেন
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এ সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ঝাল মুড়ি বিক্রির পাশাপাশি ফুচকা কিভাবে বানিয়ে বিক্রি করবেন বা ফুচকা বিক্রি করে কিভাবে আপনার সেল বাড়াবেন সে সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম।
আমরা সকলেই জানি মেয়েরাই ফুসকা বেশি পছন্দ করেন পাশাপাশি আনেক ছেলেরাও ফুসকা পছন্দ করে থাকেন। ফুচকা অত্যন্ত মুখরোচক একটি খাবার যা সকলে পছন্দ করে, এরকম মুখরোচক ফুসকা তৈরি করার জন্য নিম্নোক্ত উপকরণ গুলো প্রয়োজন হয়।
- সিদ্ধ ডাল,
- সিদ্ধ আলু,
- কুঁচি কুচি করে কাঁটা কাঁচা মরিচ,
- কুচি কুচি করে কাঁটা পেঁয়াজ,
- প্রয়োজনমতো লবণ,
- সরিষার তেল
- অল্প পরিমাণে ভাজা শুকনো মরিচ,
এবার সবগুলো একসঙ্গে পরিষ্কার প্লেটে নিয়ে ইয়ামি টেস্টি করে ভর্তা বানাতে হবে। এই ভর্তাগুলো ফুচকার মধ্যে পরিমাণ মতো ভেতর দিত হবে। এই ভর্তা ফুসকার ভিতরে দেওয়ার সময় সাথে যা যা মেশাবেন, সেগুলো হলো
- কুঁচি করে কাঁটা ধনিয়া পাতা,
- শসা কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা,
- টমেটো কুঁচি কুঁচি করে কাঁটা,
- ডিম কুচি কুঁচি করে কাটা,
- সাথে তেতুলের টক।
তৈরি হয়ে গেল মুখরোচক স্বাদযুক্ত ফুসকা। এবার প্লেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন আপনার কাস্টমারকে। মনে রাখতে হবে কাস্টমার ফিট তো আপনি বেচা-বিক্রিতে হিট।
উপসংহার
ঝালমুড়ি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম এ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা সবিস্তরে জানতে পেরেছেন। আমরা ঝাল মুড়ি বিক্রি করার পাশাপাশি চটপটি, পিঁয়াজু, বুট বা ছোলা বা ঘুগনি, ফুচকা কিভাবে তৈরি করবেন ও কিভাবে বিক্রি করবেন,
আপনার কাস্টমারকে কিভাবে আকৃষ্ট করবেন এসব বিষয়গুলো এখানে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। ঝাল মুড়ি অত্যন্ত মুখরোচক খাবার তাই বলেই বেশি পরিমাণে খাবেন না। পরিমাণ মতো খাবেন ও সুস্বাস্থ্যে ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
Very nice post