অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু। বর্তমান সময়ে ট্রেনের টিকিটট কাটার সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ উপায় হল অনলাইন পদ্ধতিতে টিকিট কাটা। অনলাইন পদ্ধতিতে খুব সহজেই নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেই মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মাধ্যমে আপনি ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন।
বর্তমানে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য তিনটি অ্যাপস চালু আছে। এর যে কোন অ্যাপসের মাধ্যমেই আপনি বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট কাটতে পারবেন। তিনটি অ্যাপস এর মধ্যে 'রেল সেবা' বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি অ্যাপস, রেলওয়ের 'অফিসিয়াল ওয়েবসাইট' যা বাংলাদেশের রেলের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও বিকাশ অ্যাপস এর মাধ্যমে এই টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।
পেজ সূচিপত্র
রেল সেবা অ্যাপস রেজিস্ট্রেশন
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম আলোচনায় প্রথমে আমরা আলোচনা করবো রেলসেবা অ্যাপস এর মাধ্যমে টিকিট কাটা বা টিকিট ক্রয় করা সম্পর্কে। রেল সেবা অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট কেনার জন্য প্রথমেই মোবাইলে 'রেল সেবা' (Rail Sheba) অ্যাপসটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ আদর্শ চালকের কি কি গুনাবলী থাকা উচিত?
অ্যাপসটি ডাউনলোড হয়ে গেলে -
- নাম,
- ই-মেইল এড্রেস,
- ফোন নাম্বার,
- জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার,
- পাসওয়ার্ড ও
- প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট নাম্বার দিয়েও রেজিস্ট্রেশন করা যায়।
রেজিস্ট্রেশন সফল ভাবে সম্পন্ন হলে আপনার মোবাইলে ভেরিফিকেশন লিংক বা ওটিপি পাবেন। এই ওটিপির মাধ্যমে এ্যাকাউন্ট সচল করতে হবে। এ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে এই অ্যাপে লগ ইন করে ট্রেন চলাচল সময়সূচি, ট্রেনের টিকিট কাটা ও প্রয়োজনে ট্রেনের টিকিট ভেরিফাই করতে পারবেন।
টিকিট ক্রয় বা টিকিট কেনার নিয়ম
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো টিকিট ক্রয় বা কেনা সম্পর্কে। টিকিট কেনার জন্য পারচেজ (Purchase) এ ক্লিক করে যে অপশন গুলো আসবে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। অপশন গুলো নিম্নরূপ -
আরো পড়ুনঃ কি কি ক্ষতি হতে পারে গাড়ি চালানো অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বললে।
- ট্রেন যাত্রা শুরু স্টেশনের নাম (যে স্টেশনে উঠবেন),
- ট্রেন যাত্রার শেষ স্টেশনের নাম (যে স্টেশনে নামবেন),
- ট্রেন যাত্রার তারিখ,
- ট্রেন যাত্রার সময়,
- যাত্রী সংখ্যা বা আসন সংখ্যা,
- আসনের শ্রেণী (শোভন, শোভন চেয়ার, এসি, স্নিগ্ধা)।
উপরোক্ত তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে এই সময় কোন কোন ট্রেন আছে এবং কোন সময় ছেড়ে যাবে তার বিস্তারিত তথ্য চলে আসবে। এবার আপনার পছন্দমত সিট নির্বাচন করে এক এ্যাকাউন্ট দিয়ে সর্বোচ্চ ৪টি আসনের জন্য টিকেট কাটতে পারবেন। কাজেই একজনের চারটের বেশি আসন নির্বাচন করা উচিত নয়। আবার একটি এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সপ্তাহে দুইবারের বেশি টিকেট কাটা যাবে না।
এরপরে আপনার মোবাইলে কন্টিনিউ (Continue) অপশন আসবে। কন্টিনিউ অপশনে ক্লিক করলে ভাড়াসহ সকল তথ্য দেখতে পাবেন। ভাড়ার সাথে চার্জ ও ভ্যাট যুক্ত করে যে পরিমাণ টাকা পরিশোধ (Pay) করতে হবে তার পুরো পরিমাণটা দেখা যাবে।
যেভাবে ভাড়ার টাকা বা মূল্য পরিশোধ করবেন
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো যেভাবে ভাড়ার টাকা বা মূল্য পরিশোধ করবেন সে সম্পর্কে। উপরোক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে আপনার মোবাইলে পে নাও (Pay Now) অপশন আসবে। এখানে রকেট, নগদ, ভিসা কার্ড, বিকাশ, মাস্টার কার্ড, নেক্সাস কার্ড দিয়ে ভাড়ার টাকা বা মূল্য পরিশোধ করা সুযোগ পাবেন।
আপনি যে মাধ্যমে টাকা প্রদান করতে ইচ্ছুক সেই মাধ্যম বা এ্যাকাউন্টের নাম্বার ও পিন নাম্বার দেওয়ার পরে একটি ওটিপি আপনার মোবাইলে আসবে। এই কোড দিলেই টাকা পরিশোধের মাধ্যমে আপনার টিকিট কেনা কনফার্ম হয়ে গেল।
আরো পড়ুনঃ নেপাল ভ্রমণঃ ঘুরে আসুন হিমালয়কন্যা নেপাল থেকে।
আপনার এ্যাকাউন্ট থেকে ভাড়ার সম্পূর্ণ পরিমান টাকা কেটে নেবে ও তিরিশ মিনিট পরে আপনার মোবাইলে ইমেইল এর মাধ্যমে টিকিট পাঠিয়ে দিবে। এছাড়াও অ্যাপসে গিয়ে হিস্টোরিতে (History) ক্লিক করে টিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট ক্রয়
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে কিভাবে টিকিট ক্রয় করা যায় সে সম্পর্কে। বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করার জন্য বিকাশ অ্যাপসে পবেশ করলে বাংলাদেশের রেলওয়ে 'ই-টিকেটিং সার্ভিস' স্ক্রিনে আসবে।
আরো পড়ুনঃ স্মার্টফোন ব্যবহারে শিশুদের কি কি ক্ষতি করে।
টিকিট আইকন থেকে ট্রেন নির্বাচন করার পরে রেলওয়ে ওয়েবসাইট বা অ্যাপে নিবন্ধিত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েই এখানে লগইন করতে হবে। এরপরে বিকাশের মাধ্যমে ভাড়ার টাকা পরিশোধের অপশন আসবে।
এই অপশনে বিকাশ নাম্বার দিলে ফোনে একটি ওটিপি (OTP) আসবে। এই কোড ও পিন নাম্বার দিয়ে টিকেট কনফার্ম করলে ই-মেইল করে টিকিট পাঠিয়ে দেয়া হয়। অবশ্য এই কাজটি সফল ভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং এ এ্যাকাউন্ট করে রাখতে হয়।
রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট ক্রয়
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় সম্পর্কে। বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির কারণে ঘরে বসে খুব সহজেই মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ( Https://etoket.railway.gov.bd ) প্রবেশ করে সেখান থেকে নিশ্চিন্ত ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন।
রেলওয়েব অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট কাটার জন্য প্রথমে যে কোন একটি ব্রাউজারে প্রবেশ করতে হবে তারপর সেখান থেকে রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঢুকবেন। এখানেও প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
এখানে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য 'রেলসেবা' অ্যাপসের মত একই নিয়মে প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য পূরণ করে। রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে পারচেজ টিকেট ( Purchase Ticket ) অপশনটিতে ক্লিক করে আপনাকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পূরণ করতে হবে। বিষয়গুলো হলো -
আরো পড়ুনঃ স্মার্টফোন কেনার সময় যে ১৩ টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
- ট্রেনযাত্রা শুরুর স্টেশনের নাম
- ট্রেন যাত্রা শুরু স্টেশনের নাম (যে স্টেশনে উঠবেন),
- ট্রেন যাত্রার শেষ স্টেশনের নাম (যে স্টেশনে নামবেন),
- ট্রেন যাত্রার তারিখ,
- ট্রেন যাত্রার সময়,
- যাত্রী সংখ্যা বা আসন সংখ্যা,
- আসনের শ্রেণী (শোভন, শোভন চেয়ার, এসি, স্নিগ্ধা)।
উপরোক্ত তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়ে গেলে পেমেন্ট অপশনের মাধ্যমে পেমেন্ট নিশ্চিত করলে ই-মেইল এর মাধ্যমে আপনার টিকিট পাঠিয়ে দেয়া হবে।
উপসংহার
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কিত আজকের এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জানতে পেরেছেন অনলাইনে কিভাবে ট্রেনের টিকিট কাটতে হয়। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য অনলাইনে ঘন্টা পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার কোন দরকার নেই।
আপনি নিশ্চিন্তে নিরাপদে ঘরে বসে থেকে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কাটা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শিখেছেন। অনলাইনে টিকিট কাটার মাধ্যমে নিশ্চিন্তে নিরাপদে ট্রেনে ভ্রমণ করুন। সুস্থ থাকুন।ধন্যবাদ সবাইকে।
aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url