শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস এ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি লেখা। শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথেই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে থাকে ফলে সর্দি, কাশি, হাঁচি, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শরীরে ব্যথা এ রকম বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা জনিত রোগ বেড়ে যায়।
একটু সতর্কতার সহিত কিছু বিষয় মেনে চললে শীতকালে যে কেউ স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ভালো থাকতে পারেন। শীতকালে শিশু ও বৃদ্ধসহ সকলেরই বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।শীতকাল সুস্থ থাকার জন্য সকলের উষ্ণ থাকাটা জরুরি। শরীরে তাপ ধরে রাখতে নিম্নের নিয়মগুলো মেনে চলুন।
পেজ সুচীপত্র
১.গরম পানীয় পান করুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস আলোচনার প্রথমে আমরা আলোচনা করব শরীর উষ্ণ রাখার জন্য গরম পানিয় পান করা জরুরি। তাপ বৃদ্ধি শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম উপায়।
গরম পানিয় বিশেষ করে চা, কফি, লেবুর শরবত, গরম দুধ, তুলসী পাতার চা ও মধু প্রভৃতি। এগুলো শরীরের তাপ বৃদ্ধি করে শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
২.নিয়মিত হাঁটুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা জেনে নেব শীতে নিয়মিত হাঁটলে বা দৌড়ালে শরীর সুস্থ থাকে সে সম্পর্কে। শীতের মধ্যে শরীর উষ্ণ রাখাটা জরুরী
আরো পড়ুন ঃ লাল শাকের পুষ্টিগুণ ও ১৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
শরীর উষ্ণ রাখার জন্য শীতের সময় প্রতিদিন নিয়ম করে নিরাপদ স্থানে সকালে রোদ উঠার পরে অথবা বিকালে হাঁটাহাঁটি বা দৌড়াদৌড়ি করুন। আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে আপনি হাঁটুন বা দৌড়ান অথবা জগিং করুন।
মূল কথা শরীর সক্রিয় রাখুন এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে, শরীর সুস্থ থাকে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ফলে শীতের মধ্যে সুস্থ থাকা যায়।
৩.সুষম খাবর গ্রহণ করুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস আলোচনায় এখন আমরা জেনে নিব শীতকালে সুস্থ খাবার গ্রহণ সম্পর্কে। আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রতিটা সময় ব্যালেন্স ডায়েটেশন খাবার গ্রহণ করা উচিত।
আরো পড়ুন ঃ মাটির পাত্রে পানি রেখে পান করলে মিলবে ১৫ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
শীতকালে দেহ-মন সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাদ্য বিশেষ করে মৌসুমী ফল, শাক-সবজি, ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এই খাবারগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে।
৪.পর্যাপ্ত ঘুমান
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপসের মধ্যে অন্যতম একটি হল পর্যাপ্ত ঘুম। শীতের দিনে শরীর সুস্থ রাখার জন্য পুষ্টি ও ব্যায়ামের পাশাপাশি অন্যতম উপায় হলো পর্যাপ্ত ঘুম। একজন সুস্থ মানুষের ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো জরুরী।
এই ঘুমটা রাতের বেলায় ভালো। রাতে অযথা অকারণে রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ করুন। রাতে ঘুম ভালো হলে মানসিক স্ট্রেস কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে,শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়ে, শরীর-মন সতেজ থাকে। সেজন্য শীতে শরীর সুস্থ রাখার জন্য ঘুমের বিকল্প নেই।
৫.ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার সম্পর্কে। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে ময়েশ্চারাইজড করার জন্য প্রাকৃতিক তেল উপকারী।
আরো পড়ুন ঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম।
বিশেষ করে নারিকেল তেল, সরিষার তেল, অলিভ অয়েল, নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করে মেসেজ করুন। এতে করে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয় ও ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায়।
৬.শীতের পোশাক ঠিকমতো পরুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব শীতে শরীর সুস্থ রাখার জন্য ঠিক মতো পোশাক পরেছেন কিনা সে সম্পর্কে। শীত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য গরম, উলেন ও সুতির পোশাক পরা উচিত।
আরো পড়ুন ঃ আনারসের পুষ্টিগুণ ও ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
সেই ধরনের পোশাক পরুন যে পোশাক দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা বাহিরে বা বাহিরের ঠান্ডা বাতাস শরীরে প্রবেশ করতে না পারে। প্রচন্ড শীতে প্রয়োজনে হাত মজা, টুপি বা কানটুপি, মাফলার ব্যবহার করুন। শরীরে তাপমাত্রা ধরে রাখাই মূল উদ্দেশ্য।
৭.পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরী।অনেকেই শীতের ভয়ে পানি পান করতে চান না বা অল্প পরিমাণে পানি পান করেন। এতে করে শরীরের জলীয় মাত্রা কমে যায় ও প্রসাবে জ্বালাপোড়া করে। শীত মৌসুমে পিপাসা কম অনুভূত হলেও পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
আরো পড়ুন ঃ স্মার্ট ফোন কেনার সময় যে ১৩ টি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
কম পানি পান করার কারণে শরীরে ডিহাইড্রেশন হতে পারে তাই শরীরকে সুস্থ-সবল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কুসুম গরম পানি পান করুন বা সুপ খেতে পারেন। এতে করে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
৮.ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহন করুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস। শীতে শরীর সুস্থ রাখার জন্য এই মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন হয়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলমূল (যেমন-কমলা, আঙ্গুর, মাল্টা, জলপাই, পেঁপে, আনারস)
নিয়মিত নিয়ম মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে শরীর সুস্থ থাকে, শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে যায় এবং ফ্লু জাতীয় ঠান্ডা জনিত রোগ কমে যায়।
ক্যারোটিন সমৃদ্ধ মৌসুমী শাকসবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজর, ফুলকপি, পালংশাক, শিম, মটরশুটি সহ বিভিন্ন রকমের মৌসুমী শাকসবজি) এগুলো কিভাবে দেহের তাপমাত্রা বাড়ে শীতের সময় সুস্থ থাকা যায়।
৯.মাঝে মাঝে ঘরে আলো-বাতাস প্রবেশ করান
শরীর সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রয়োজন। সেজন্য মাঝে-মধ্যে দিনের বেলায় ঘরের দরজা জানালা খুলে দিয়ে আলো বাতাস প্রবেশ করেন। এতে করে ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব কেটে যাবে।
ঘরের ভ্যাঁপসা গন্ধ দূর হবে। পর্যাপ্ত ফ্রেশ অক্সিজেন নিতে পারবেন। যার কারণে শরীর-মন এনার্জিটিক হবে। আপনি শীতের দিনেও থাকবেন প্রাণবন্ত ও সুস্থ।
১০.নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শীতে শরীর সুস্থ রাখার সহজ ১৪ টি টিপস আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব শীতে শরীর সুস্থ রাখার জন্ ব্যায়াম করা জরুরী সে সম্পর্কে। শীতে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক থাকে। শরিফ সক্রিয় ও সজীব থাকে।
শরীরের মেটাবলিক কার্যক্রম ভালো থাকে। ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তাপমাত্রা বাড়ে। এই জন্য ব্যায়াম করলে শীতে সুস্থ থাকা সহজ হয়। সেই জন্য শীতের দিনে নিয়মিত নিয়ম করে ব্যায়াম করুন শরীর সুস্থ রাখুন।
১১.মাস্ক ব্যবহার করুন
শীতে মাস্ক ব্যবহার করলে শরীর সুস্থ থাকে। শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কম থাকার কারণে বাতাসে প্রচুর ধুলিবালি থাকে। শীতে অনেক কুয়াশা থাকার কারণে মাস্ক ব্যবহার করে চলাফেরা করলে ধুলি-বালি ও কুয়াশা নাক দিয়ে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না।
মাস্ক পরলে ধুলি-বালি ও কুয়াশামুক্ত বাতাস গ্রহণের ফলে এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডা জনিত রোগ কম হয়। স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও শরীর সুস্থ থাকে। ঘরের বাহিরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
১২.নিয়মিত শরীরে রোদ লাগান
শীতে সুস্থ থাকার সবচাইতে ভালো উপায় হল শরীরে রোগ লাগানো। শীতের দিনে যদি রোদ বের হয় তাহলে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট রোদে থাকা উচিত।
এতে করে শরীরের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ হয়, হাড়ের গঠন মজবুত হয়, শরীরের হালকা ধরনের বিষ-ব্যথা সেরে যায়। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও শরীর সুস্থ থাকে।
১৩.দেহের ঘাম ঝরান
দেহের ঘাম ঝরানোর জন্য শীতের দিনে সহনীয় মাত্রায় কিছু ব্যায়াম করা জরুরি। যে ব্যায়ামগুলোর কারণে শরীর সচল থাকে, শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে ও তাপ উৎপন্ন হয়।
শীতকালে শরীর থেকে ঘাম ঝরাতে পারলে শরীর থেকে টক্সিন জাতীয় পদার্থগুলো বের হয়ে যায়। ঘাম ঝরানোর জন্য সহনীয় মাত্রা ব্যায়াম করার পাশাপাশি ব্যাডমিন্টন, দড়িখেলা, বাস্কেটবল, ভলিবল এই খেলাগুলো খেলতে পারেন।
১৪.ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা শীতকালে অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। শীতের সময় শরীরে শীত লাগার ভয়ে অনেকে বেশি নাড়াচাড়া করেন না, এতে করে শরীরের চর্বি জমে শরীর স্থুল বা মোটা হয়ে যায়। স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন বেড়ে যায়।
সেজন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে কিছু কায়িক পরিশ্রম করতে হয়, কিছু ব্যায়াম করতে হয়, খেলাধুলা করতে হয়। ওজন কমানোর কাজগুলো শীতকালে শরীর ঠিক রাখার একটি অন্যতম উপায়। সেজন্য শীতকালে মুভমেন্ট বাড়ান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, নিজেকে ফিট রাখুন।
উপসংহার
আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা শীতে শরীর সুস্থ রাখার টিপসগুলো পুরোপুরি জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। শীতে সুস্থ থাকা সম্পর্কে যদি কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। শীতে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বাড়তি যত্ন নিন।
এরকম আরো আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন। শীত সম্পর্কিত আজকের এ আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন, যাতে তারাও এই তথ্যগুলো জানতে পারে এবং সেই মতে চলতে পারে। আর্টিকেলটি পোড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url