ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আজকের আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয়। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন ফুলকপির পরিচিতি, ফুলকপির পুষ্টিগুণ, ফুলকপির দশটি উপকারিতা, ফুলকপি খাওয়ার নিয়ম, ফুলকপির বিভিন্ন রেসিপি, ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে।

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

দক্ষিণ-পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ফুলকপির চাষাবাদ শুরু হলেও ভারতবর্ষে অনেক আগে থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে। আর তখন থেকেই অনেক জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি হিসেবে আমরাও খেয়ে থাকি। এই ফুলকপি সবজিটির রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা।

পেজ সূচীপত্র

ফুলকপির পরিচিতি

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনার আগে আপনাদের একটু জেনে নেওয়া দরকার ফুলকপির পরিচিতি সম্পর্কে। পাতা দিয়ে ঘিরে থাকা অংশটুকু দেখতে ফুলের মত লাগে বলেই একে ফুলকপি নাম করণ করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। 
এটি ফুল জাতীয় সবজি। এর ফুল, পাতা ও নরম ডাটা সবই সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।

এক নজরে ফুলকপি -
  • সবজির নামঃ ফুলকপি (Phulkapi),
  • ফুলকপির ইংরেজি নাম ঃ Caualiflower,
  • ফুলকপির বৈজ্ঞানিক নামঃ ব্রাসিকা অলেরাসীয়া  (Brassica oleracea),
  • ফুলকপির রং ঃ সবুজ, কমলা, বেগুনি ও সাদা রঙের হয়ে থাকে।
  • পরিবার ঃ ফুলকপি বাসিকা পরিবারের উদ্ভিদ। বাঁধাকপি ব্রাসেলস  স্প্রাউট, ব্রোকলি সবই এই পরিবারভুক্ত।
  • উৎসঃ উত্তর-পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল।

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও পুষ্টিমান

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও পুষ্টিমান সম্পর্কে। ফুলকপি অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি সবজি। খেতেও বেশ সুস্বাদু।

আরো পড়ুনঃ ডুমুরের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার উপকারিতা

অত্যন্ত পুষ্টিগুণ ও পুষ্টিমান সমৃদ্ধ একটা সবজি ফুলকপি। ইউএসডিএ'র তথ্য মতে একটি মাঝারি আকারের ফুলকপিতে নিম্নোক্ত পরিমাণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
  • এনার্জি - ২৫ কিলোক্যালরি,
  • কার্বোহাইড্রেট - ৪.৯৭ গ্রাম,
  • প্রোটিন - ১. ৯২ গ্রাম,
  • ফ্যাট ০.২৮ গ্রাম,
  • ফোলেট - ০.৫৭ মাইক্রো গ্রাম,
  • নিয়াসিন - ০.৫০ মাইক্রোগ্রাম,
  • থায়ামিন বি১  - ০.০৫ মাইক্রো গ্রাম,
  • প্যানথানিক এসিড - ০.৬৬৭ মাইক্রোগ্রাম,
  • ক্যালসিয়াম - ৬২৬ মিলিগ্রাম,
  • আয়রণ - ৪০ মিলিগ্রাম,
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ,
  • ভিটামিন সি,
  • ভিটামিন কে,
  • পটাশিয়াম,
  • ফ্লোরাইড,
  • কোলিন,
  • ফোলেট,
  • আয়রণ,
  • জিংক,
  • আইসো থায়োসায়ানেটস,
  • এছাড়াও কয়েকটি পটেনশিয়াল ভিটামিন ও 
  •  খনিজ পদার্থ।

গবেষকদের মধ্যে ফুলকপিতে যে পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে, সেগুলো প্রায় সব শাক-সবজির চেয়ে বেশি।

ফুলকপি খাওয়ার নিয়ম বা কিভাবে খাবেন ফুলকপি

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খাওয়ার নিয়ম বা কিভাবে খাবেন ফুলকপি সে সম্পর্কে। যদিও ফুলকপি একটি সবজ! কিন্তু  ফুলকপি উপায়ে খাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ অ্যালোভেরার পুষ্টিগুণ উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম।

  • কাঁচা খাওয়া যায়,
  • রান্না করে খাওয়া যায়,
  • ডাটা ও পাতার কচি অংশ স্যুপ বানিয়ে খাওয়া যায়,
  • আচার বানিয়ে খাওয়া যায় এবং 
  • বিভিন্ন ধরনের মজার মজার রেসিপি তৈরি করে খাওয়া যায়।

বিঃ দ্র ঃ ফুলকপি বেশি সিদ্ধ করে না খাওয়াই ভালো, এতে করে ফুলকপিতে বিদ্যমান এ্যানটিঅক্সিডেন্ট নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ফুলকপি খাওয়ার উপকারিতা সমূহ

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খাওয়ার উপকারিতা সমূহ কি কি সে সম্পর্কে অর্থাৎ ফুলকপির ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সমূহ।

ফুলকপি খাওয়ার উপকারিতা সমূহ

ফুলকপি এমন একটি সবজি যার ফুল, পাতা ও ডাটাগুলোতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা। ফুলকপির স্বাস্থ্য উপকারিতা সমূহ নিম্নে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।

ত্বকে ও চুলের জন্য উপকারি 

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জেনে নিব ফুলকপি ত্বকের জন্য উপকারি সে সম্পর্কে। ফুলকপিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে

আরো পড়ুনঃ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি যেগুলো ত্বক ও চুলকে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। ফুলকপি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ  ক্ষমতা বাড়ায় 

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে সে সম্পর্কে। ফুলকপিতে বিদ্যমান

আরো পড়ুনঃ শসার পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন।

ভিটামিন সি সহ অন্যান্য খাদ্য উপাদানগুলো শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও নিয়মিত ফুলকপি খেলে সর্দি-কাশি বা ফ্লু এ জাতীয় রোগগুলো কম হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও সদশটি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জেনে নেব নিয়মিত ফুলকপি খেলে কিভাবে ক্যান্সার প্রতিরোধ সহায়তা করা সে সম্পর্কে।

আরো পড়ুনঃ লটকন ফল খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা।

ফুলকপিতে সালফোরাফেন নামাক একটি যৌগ রয়েছে যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধে সহায়তা করে। এছাড়াও মূত্রথলি, পোস্টেট, ডিম্বাশয় ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে ফুলকপির উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।

হাড় দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী 

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করবো হাড়, দাঁত ও মাড়ির গঠনে ফুলকপি কতটা উপকারী সে সম্পর্কে।

হাড় দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী

 গবেষকদের মতে ফুলকপিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ক্লোরাইড, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি২ ও ভিটামিন সি সহ অন্যান্য পুষ্টিমান যেগুলো হাড়, দাঁত ও মাড়ির গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও দশটি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় সে সম্পর্কে। 

ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে  ডায়াটরি ফাইবার বা আঁশ। যেগুলো খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও মল ত্যাগ সহজ হয়।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় 

ফুলকপি পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় সে সম্পর্কে। গবেষকদের মতে ফুলকপিতে সালফার যৌগ

সাফোরাফেন থাকে যা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে হৃদরেগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও কোষের ও ডিএনএ এর স্বাভাবিক ক্রিয়াকর্ম সম্পাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত এই সালফোরাফেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে সে সম্পর্কে। ফুলকপিতে খুবি অল্প পরিমাণে কার্বোহাইডেট থাকে।

যা ডায়াবেটিসের উপরে তেমন কোন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এতে বিদ্যমান ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

ওজন কমাতে সহায়তা করে

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও দশটি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খেলে ওজন কমতে সহায়তা করে সে সম্পর্কে। গবেষকদের মতে ফুলকপিতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং তন্তু ও পানির পরিমাণ বেশি থাকে।

ফলে একবার খেলে অনেক সময় পেট ভরা থাকে এমন মনে হয়। এর জন্য পরবর্তীতে ক্ষুদা কম লাগে ও খাবার প্রবনতা কম থাকে। ফুলকপির এ বৈশিষ্ট্যের কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়

ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও দশটি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ফুলকপি খেলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এ বিষয় সম্পর্কে। বিভিন্ন গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, 

ফুলকপিতে কোলিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, এন্ট্রিঅক্সিডেন্ট ও অনেক মাইক্রো নিউটিয়েন্টে রয়েছে যেগুলো স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং ডিপ্রেশন দূর করে, ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।

উপসংহার

আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ফুলকপি সম্পর্কে সকল ধরনের তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। এই লেখাগুলো সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানানোর অনুরোধ রইল।

প্রিয় পাঠক বৃন্দ এরকম আরো আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন। নিয়মিত ও পরিমান মত ফুলকপি খাবেন সুস্বাস্থ্যের সহিত জীবন-যাপন করবেন। আর্টিকেলটি পড়ার আপনাকে ধন্যবাদ।

তথ্যগুলো সংগৃহীত 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
2 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • MD Raihan Islam
    MD Raihan Islam December 4, 2024 at 5:21 PM

    daron

    • AKS Green IT
      AKS Green IT December 5, 2024 at 4:59 AM

      Thanks a lot

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url