তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি লেখা। তেঁতুলের কথা বলতেই প্রায় সবারই জিভে পানি চলে আসে। তেতুল টক মিষ্টি স্বাদের একটি ফল। আমরা প্রায় সকলেই কম-বেশি টক পছন্দ করে থাকি। অনেকেরই স্মৃতির পাতায় ছোট বেলায় তেঁতুল খাওয়ার স্মৃতি এখনো স্মৃতি হয়েই আছে। এই তেতুলের উপকারিতা অনেক!
তেতুলের ঔষধি গুণের কারণে প্রাচীনকাল থেকেই এর বহু ব্যবহার প্রচলিত আছে। তেঁতুলের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন তেঁতুলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম ও কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। আর দেরি না করে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
পেজ সুচিপত্র
তেঁতুলের পরিচিতি
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে এ ফলটির পরিচিতি একটু জেনে নেয়া দরকার। ভেষজ গুণসম্পন্ন এ ফলগুলো লম্বা বা একটু বাঁকা আকৃতির হয়ে থাকে। তেঁতুল কাঁচা অবস্থায় হালকা সবুজ হলেও পেঁকে যাওয়ার সাথে সাথে এর বাইরের অংশ বাদামী রঙের হয়ে যায়।
আর ভেতরের অংশ হয়ে যায় খয়েরী বা লালচে বর্ণের। এর বাইরের আবরণ বেশ শক্ত বাদামের মতো। এই আবরণের নিচেই থাকে শাঁশযুক্ত অংশ, তার ভিতরে থাকে বেশ কয়েকটি (৬ থেকে ১২ টি) বীজ বা বিচি। তেঁতুলের শাঁশ ও বীজ দুটোই উপকারী তবে আমরা শাঁশটাই খেয়ে থাকি।
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও পুষ্টি উপাদান
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ অনেক! টক-মিষ্টি স্বাদের কাঁচা-পাকা তেঁতুলে রয়েছে নানা রকমের পুষ্টিগুণ ও পুষ্টি উপাদান। যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন। নিয়মিত ও পরিমান মতো তেঁতুল খেলে এই পুষ্টিগুলো মানব শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। তেঁতুলের পুষ্টি উপাদান ও পুষ্টি মান গুলো নিম্নরূপ -
আরোও পড়ুন ঃ সোনা পাতার ১৫ টি উপকারিতা ও সতর্কতা।
- প্রতি ১০০ গ্রাম তেঁতুলে রয়েছে
- এনার্জি বা শক্তি - ২৩৯ কিলোক্যালরি,
- ফাইবার বা আঁশ - ৫.১ গ্রাম,
- কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা - ৬২.৫ গ্রাম,
- সুগার বা চিনি - ৫৭.৪,
- সেট বা স্নেহ পদার্থ - ০.৬ গ্রাম,
- প্রোটিন বা আমিষ - ২.৮ গ্রাম,
- ভিটামিন এ - ৩০ আইইউ,
- ভিটামিন বি১ - ০. ৪৩ মিলিগ্রাম,
- ভিটামিন বি২ - ১৫ মিলিগ্রাম,
- ভিটামিন বি৩ - ১.৯৪ মিলিগ্রাম,
- ভিটামিন বি৫ - ০.১৪৩ মিলিগ্রাম,
- ভিটামিন বি৬ - ০.০৬৬ মিলিগ্রাম,
- ফোলেট বা ভিটামিন বি৯ - ১৪ মাইক্রোগ্রাম,
- ক্যালসিয়াম - ৭৪ মিলিগ্রাম,
- কপার - ০.৮৬ মিলিগ্রাম,
- আয়রণ বা লৌহ - ২.৫ মিলিগ্রাম,
- ম্যাগনেসিয়াম - ৯২ মিলিগ্রাম,
- পটাশিয়াম - ৬২৮ মিলিগ্রাম,
- সেলেনিয়াম - ১.৩ মাইক্রগ্রাম,
- সোডিয়াম - ২৮ মিলিগ্রাম,
- জলীয় অংশ বা পানি - ৩১.৪ গ্রাম। ইত্যাদি।
- এছাড়াও অন্যান্য খনিজ উপাদান ও ভিটামিন।
তথ্যসূত্র ঃ ইউএসডিএ ডাটাবেজ।
তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম
তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম বা তেঁতুল কিভাবে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায় সে সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করব। তেঁতুল পুষ্টিগুণ সম্পন্ন টক জাতীয় একটি ফল। এ ফলটি খাওয়ার ধরা বাধা কোন নিয়ম নেই, তবে ফলটি পরিমিত পরিমাণে খেতে হয়। তেতুল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো -
আরও পড়ুন ঃ মেহেদি পাতার ১৭ টি উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম।
- তেঁতুলের আচার তৈরি করে খাওয়া যায়।
- তেঁতুল রান্না করে ডালের মত করে টক ডাল হিসেবে খাওয়া যায়।
- ফুচকার সাথে তেঁতুল-পানি মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- তেঁতুল অল্প পরিমাণে পানিতে ভিজিয়ে সরবত করে খাওয়া যায়।
- তেঁতুলে অল্প পরিমাণে মরিচের গুঁড়া ও লবণ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- কাঁচা তেঁতুল পাটায় পিষে হালকা লবণ মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- কিছু কিছু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য অল্প পরিমাণ তেল মিশিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়।
- কচু জাতীয় কিছু খাবার খেলে মুখ চুলকায়, সেক্ষেত্রে মুখ চুলকানো বন্ধ করার জন্য তেঁতুল খাওয়া যায়।
অপরিমিত ভাবে প্রতিদিন তেঁতুল খাওয়া উচিত নয়। আবার এক দিনে দশ গ্রামের বেশি তেঁতুল খাওয়া উচিত নয।
১.তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব মানব স্বাস্থ্যে তেঁতুলের উপকারিতা সম্পর্কে। তেঁতুল অত্যন্ত পুষ্টি ও ভেষজগুণ সম্পন্ন একটি উপকারী ফল। এ ফলটি সঠিক নিয়মে নিয়মিত পরিমাণমতো খেলে মানবসাস্থ্যের অনেক উপকার করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, ওজন কমাতে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ও প্রচন্ড রোদের তাপে শরীর কড়া হয়ে গেলে, শরীর শীতল করতে তেঁতুলের উপকারিতা বা ভূমিকা অনেক এছাড়াও তেতুলের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে যেগুলো নিম্নে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।
২.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনা এখন আমরা জেনে নেব তেঁতুল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সে সম্পর্কে। তেঁতুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্ট্রিঅ্যাক্সিডেন্ট,
আরও পড়ুন ঃ তিসি বীজের পুষ্টিগুণ ও ১৫ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
ভিটামিন সি ও অন্যান্য মিনারেল যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও জ্বর-সর্দি-কাশি নিরাময়ের এর যথেষ্ট উপকারীতা রয়েছে।
৩.ওজন কমাতে সহায়তা করে
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আমরা জেনে নেব তেঁতুল খেলে আমাদের ওজন কমে সে সম্পর্কে। আপনারা আগে থেকেই জানেন ওজন বেড়ে গেলে কিডনির রোগ, লিভারের সমস্যা, হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকাটা জরুরী।
আরও পড়ুন ঃ ঢেঁড়সের পুষ্টিগুণ ও ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
তেঁতুলে রয়েছে টারটারি এসিডসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যে উপাদান গুলোর কারণে শরীরের অতিরিক্ত মেদ-চর্বি কেটে যায়। নিয়মিত তেঁতুল সেবনের কারণে শরীরের অতিরিক্ত মেদ-চর্বি কমে যায় ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে ও শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
৪.তেঁতুল খেলে হজম বাড়ে
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জেনে নিব তেঁতুল খেলে হজম বাড়ে সে সম্পর্কে। তেঁতুল একটি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, যেটি খেলে দ্রুত অন্যান্য খাবার হজমে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন ঃ পেঁপের পুষ্টিগুণ ও ১৯টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
তেঁতুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে টারটারিক এসিড ও ম্যাজিক এসিড। যেগুলো হজম বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও ডাইরেক জনিত পেটের ব্যথায় তেঁতুলের মূল বা গাছের ছাল ব্লেন্ড করে নির্যাস খেলে খুব দ্রুত এ ব্যথা উপশম হয়।
৫.উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আলোচনা করব উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তেঁতুল যথেষ্ট উপকারী সে সম্পর্কে। তেঁতুল খেলে শরীরের ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল এর পরিমাণ বেড়ে যায়।
অপরদিকে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। যার কারনে রক্তের চলাচল ঠিক থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকতে সহায়তা করে। সেজন্য নিয়মিত তেঁতুল খান উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।
৬.হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করে
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিব তেতুল খেলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করে সে সম্পর্কে। চৈত্রের তাপদহে যখন মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা! মানুষের শরীর প্রচন্ড কড়া হয়ে যায়।
সে সময় দুপুরে রোদের সময় তেঁতুলের শরবত সামান্য লবণের সাথে গুলিয়ে খেলে শরীর ঠান্ডা রাখে ও হিট স্ট্রোকের প্রবণতা কমে যায়। এভাবে গরমের সময় প্রতিনিয়ত পরিমান মতো তেঁতুলের শরবত খেলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ হয।
৭.ত্বক উজ্জ্বল করে
তেতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনায় এখন আপনাদের জানাবো তেঁতুল খেলে ত্বক উজ্জ্বল করে সে সম্পর্কে। ত্বকের ছোপ ছোপ দাগ ও বলি রেখা দূর করে ত্বককে মসৃণ, উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তেঁতুলের রস।
তেঁতুলে রয়েছে আলফা হাইড্রোক্সি এসিড, ট্রারটারিক এসিড সাইট্রিক অ্যাসিড ও ম্যালিক এসিডসহ অন্যান্য উপাদন। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন এন্ট্রি অক্সিডেন্ট এ গুলোই ত্বককে দাগ মুক্ত করে উজ্জ্বল করে।
৮.লিভার ভালো রাখে
লিভার ভালো রাখতে সহায়তা করে তেঁতুলে বিদ্যমান বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মিনারেলস ও ভিটামিন উপাদানগুলো তেঁতুল খেলে লিভারের অক্সিভেটিভ স্ট্রেস কমে যেতে সহায়তা করে।
গবেষণা লব্ধ ফলাফল থেকে দেখা গেছে তেঁতুলে বিদ্যমান ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সেলিনিয়াম লিভারের লিপিড উপাদান গুলোকে ফ্রি রেডিক্যালের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৯.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
ডায়াবেটিস তথা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে তেঁতুল। তেঁতুলে বিদ্যমান বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ও আলফা এ্যামাইলেজ এনজাইম এর কারণে এটি শরীরে কার্বোহাইড্রেট শোষণে সহায়তা করে।
মূলত: আলফা এ্যামাইলেজ এনজাইম এর কারনেই রক্ত সুগারের মাত্রা কমে। ডায়াবেটিসের রোগীরা নিয়মিত তেঁতুল খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে। ডায়াবেটিসের রোগীরা নিয়মিত তেঁতুল সেবন করুন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
১০.ক্ষত সারাতে সহায়তা করে
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতার মধ্যে একটি অন্যতম উপকারিতা হলো তেঁতুলের পাতা, ছাল ও বাকলের অ্যান্টিসেপটিক ও এন্ট্রিব্যাকটেরিয়াল এফেক্ট রয়েছে। যার কারণে শরীরের কোন অংশ কেটে গেলে বা ক্ষতের সৃষ্টি হলে তা সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে তেতুলের পাতা, ছাল বা বাকল ও এর রস।
১১.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে তেঁতুল। পেটের ব্যথা বা ডাইরিয়ার মতো সমস্যা সমাধানে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তেঁতুল পানি ব্যবহারের নজির রয়েছে। তেঁতুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ বা ফাইবার
যেগুলো কোষ্ঠকাঠি দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও তেঁতুলে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যালিক এসিড ও টারটারিক এসিড যে গুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
১২.সর্দি-কাশি বা ফ্লু সারাতে
সর্দি-কাশি বা ফ্লু সারাতে তেঁতুলের যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। তেঁতুলে রয়েছে এন্ট্রি-অ্যালার্জি বা এন্ট্রি-হিস্টামিনিক প্রপার্টিজ। যার ফলে আমাদের স্কিনের বিভিন্ন রকমের ফুসকুড়ি বা চুলকানি রোধ করে। এছাড়াও এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরের অল্প পরিসরে জ্বর-সর্দি -কাশি নিরাময়ে সহায়তা করে।
১৩.হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তেঁতুলের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তেঁতুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম, ফাইবার ও এন্ট্রি অক্সিডেন্ট। যেগুলো রক্তের কোলেস্টেরল কমানোর পাশাপাশি হার্টের মাসুলগুলোকে স্ট্রেনথদেন করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
১৪.ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে তেঁতুলের রস। তেঁতুলে রয়েছে এন্ট্রি মাইক্রোবিয়াল ইফেক্ট। এখনও বিভিন্ন অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার ঔষধ হিসেবে তেঁতুলের পাতা, ছাল ও তেতুলের রস ব্যবহারের রেওয়াজ রয়েছে।
প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আফ্রিকান উপজাতিরা ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় তেঁতুলের রস ব্যবহার করেন বলে জানা যায়। ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনে যে জ্বর হয় এগুলো সারাতেও তেঁতুলের রস যথেষ্ট কার্যকরী বলে জানা গেছে।
১৫.চুলের যত্নে তেঁতুল
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও ২৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতার একটি অন্যতম উপকারিতা হলো তেঁতুল চুলের যত্নে উপকারী। তেঁতুলে বিদ্যমান বিভিন্ন এন্ট্রিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি যেগুলো মাথার ত্বকের খুশকি দূর করে, চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল পড়ে যাওয়া ও ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করে, চুল হয় উজ্জ্বল, ঘন, কালো ও সিল্কি।
১৬.ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে তেঁতুল। তেঁতুলে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্ট্রিঅক্সিডেন্ট ও সক্সলেট মিথেলিক এক্সট্র্যাক্ট, যেগুলো ক্যান্সার সেল বৃদ্ধির প্রতিরোধ করে। ফলে ক্যান্সারের বিস্তার লাভ করতে বাঁধাগ্রস্ত হয়।
১৭.বুক ধড়ফড় বন্ধ করে
তেঁতুল বুক ধড়ফড় করা নিরাময় করে।
১৮.মাথা ঘুরানো বন্ধ করে
তেঁতুল মাথা ঘুরানো রোগের জন্য উপকারী।
১৯.লালা তৈরি করে
মুখের লালা তৈরিতে তেঁতুলের উপকারিতা যথেষ্ট। মুখে ঘা বা ক্ষতের সৃষ্টি হলে তেঁতুলের পানি দিয়ে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যাইয়।
২০.কৃমিনাশক
তেঁতুল পাতার রস নিয়মিত খেলে কৃমি ভালো হয় অর্থাৎ তেঁতুলের কৃমিনাশক উপকারিতা রয়েছে।
২১.জ্বালা-পোড়া কমে
পরিমাণ মতো পাকা তেঁতুল এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে হাত-পায়ের জ্বালা-পোড়া কমে যায়।
২২.মশার কয়েল তৈরিতে
মশার কয়েল তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে তেঁতুলের বিচি বা বীজ ব্যবহৃত হয়।
২৩.ঔষধ তৈরিতে
তেঁতুলের বহুবিধ উপকারিতার মধ্যে আরেকটি উপকারিতা হলো ইউনানী, আয়ুর্বেদ, হোমিও ও এলোপ্যাথিক ঔষধ তৈতুলে তেঁতুলের বীজ ব্যবহৃত হয়।
২৪.চোখের ড্রপ তৈরিতে
শুষ্ক চোখের চিকিৎসায় চোখের ড্রপ তৈরিতেও তেঁতুলের বীজের ব্যবহার রয়েছে।
২৫.কাপড়ের রং টেকসই করতে
তেঁতুলের ব্যবহারের মধ্যে আরেকটি ব্যবহার হলো সুতা বা কাপড়ের রং টেকসই করতে তেঁতুলের বীজ ব্যবহৃত হয়।
২৬.মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখে
তেঁতুলের বিচিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড, যেগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
তেঁতুল খাওয়ার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক
তেঁতুল পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ও ভেষজ মানসম্পন্ন একটি টক ফল। এ ফল পরিমাণ মতো নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে, এ কথাটি যেমন সত্য তেমনি অপরিমিত ও বেশি পরিমাণে খেলে কিছু কিছু অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক দেখা যায়। তেঁতুলের ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা নিম্নরূপ -
- বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে দ্রুত রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
- বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে।
- ত্বকে চুলকানি বা ফুসকুড়ি বের হতে পার।
- খালি পেটে তেঁতুল খেলে এসিডিটি বেড়ে যেতে পারে।
- বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় বেশি তেঁতুল খেলে প্রজেস্টেরন হরমোন কমে যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় বেশি তেঁতুল খেলে প্রিটার্ম বেবী ডেলিভারি হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় বেশি তেঁতুল খেলে গর্ভপাত হতে পারে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা তেঁতুল, তেঁতুলের পাতা, এর বীজ ও বাকল সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। এরকম আরও আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন।
আর্টিকেলটি আপনাদের প্রিয়জনের মাঝে শেয়ার করে দিন যেন তারাও এ তথ্যগুলো জানতে পারে। তেঁতুল অত্যন্ত উপকারী তাই বলেই বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। পরিমাণ মতো নিয়মিত তেঁতুল খান সুস্বাস্থ্যের সহিত সুস্থ থাকুন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
বি ঃ দ্র ঃ এই আর্টিকেলটি তেঁতুল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লেখা। যদি কেউ রেগুলার তেঁতুল খেতে চান তাহলে একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। এই তথ্যগুলো বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগৃহীত।
Nice