মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশি জানি। মোবাইলের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত থাকলেও এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে খুব একটা বেশি সচেতন হই না। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই আমরা এর সুবিধাগুলো উপভোগ করি কিন্তু এটি ব্যবহারের ফলে দিনে দিনে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে সেটা সম্পর্কে সচেতন হই না।
মানুষ জীবনযাত্রার মান ও অগ্রগতিকে আরো ত্বরান্বিত করতে আধুনিক বিজ্ঞানের বিশেষ অবদান মোবাইল ফোন। একদিকে যেমন রয়েছে এর বিশেষ সুফল ঠিক তেমনি অন্যদিকে রয়েছেকিছু কুফল। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো। এসকল তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে জানতে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।
পেজ সুচিপত্র
মোবাইল ফোনের উপকারিতা বা সুফল বা সুবিধা
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কিত আলোচনার প্রথমেই আমরা জেনে নেব মোবাইলের উপকারিতা সম্পর্কে। মোবাইল ফোন বিজ্ঞানীদের এমন একটা আবিষ্কার যা ছাড়া বর্তমানে মানব জীবন ও সামাজিক যোগাযোগ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছেন। বর্তমান সময়ে যোগাযোগের গণ্ডি পেরিয়ে জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই মোবাইল। মোবাইল ফোনের উপকারিদিক এত বেশি যে মোবাইল ফোন ছাড়া বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোনের বহুবিধ উপকারিতার মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।
- যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম,
- শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইলের উপকারিতা,
- ইন্টারনেট ব্যবহার,
- বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম মোবাইল,
- ভিডিও ও ক্যামেরা,
- ভিপিএস ও ম্যাপ,
- মোবাইলে লেনদেন সুবিধা,
- মোবাইল ফোনে টিকিট ক্রয়,
- সামাজিক মাধ্যম হিসেবে সুফল,
- মোবাইল ফোনে শপিং। ইত্যাদি।
যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম
মোবাইল ফোনের উপকারিতার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ উপকারিতা হলো মোবাইল ফোন যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। অর্থাৎ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই একজন আরেকজনের সাথে কিংবা বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যোগাযোগ করা যায়। এই যোগাযোগটা হতে পারে কথাবার্তার মাধ্যমে, এসএমএস এর মাধ্যমে অথবা ভিডিও কলের মাধ্যমে। এই যোগাযোগের সবই সম্ভব হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞানের অবদান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন ঃ কম পুঁজিতে টাকা আয় করার ১৫ টি লাভজনক ব্যবসায় ধারণা।
শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইল ফোন
বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি ও ডিজিটালাইজেশনের ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষণীয়। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে পড়ালেখায় সহায়তা পাওয়ার জন্য মোবাইল ফোন একটি বিশেষ উপকারী ডিভাইস। পড়াশোনা করার সময় যেকোনো বিষয় ঠেকে গেলে এই মোবাইল ফোনে সার্চের মাধ্যমে তার সমাধান সহজ হতে পারে। এছাড়াও অনলাইনে ক্লাস করা থেকে শুরু করে শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্যান্য কাজগুলো সহজে সহধান করা যায়।
আরও পড়ুন ঃ স্মার্টফোন ব্যবহারে শিশুদের কি কি ক্ষতি করে।
ইন্টারনেট ব্যবহারে সুফল
মোবাইল ফোন ব্যবহারের অন্যতম সুফল হলো ইন্টারনেট ব্যবহার। মোবাইল ফোনে খুব সহজেই ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে গোটা বিশ্বের আপডেট খবরা-খবর মুহুর্তের মধ্যে পাওয়া যায়। এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, মেসেঞ্জার, ফেসবুকসহ বিভিন্ন এ্যপসের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ হয়।
আরও পড়ুন ঃ স্মার্টফোন কেনার সময় যে ১৩ টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম মোবাইল
মোবাইল ফোন ব্যবহারের অন্যতম একটি সুবিধা হলো বিনোদনের সহজ মাধ্যম। এখন আর আগের মত টিভির সামনে বসে থেকে বিনোদন উপভোগ করতে হয় না। ইউটিউব বা ফেসবুক ব্যবহার কর খুব সহজেই বিনোদন উপভোগ করা যায়। এছাড়াও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই ভিডিও, গান বা মুভি ইত্যাদি আপলোড করে মুহূর্তের মধ্যেই বিনোদন উপভোগ করে মাইন্ড রিফ্রেস করা যায়।
আরও পড়ুন ঃ ছাত্রজীবনে অনলাইনে ইনকাম করার ৮ টি সহজ উপায়।
ভিডিও ও ক্যামেরা
মোবাইল ফোনের উপকারিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ভিডিও ও ক্যামেরা। আগের দিনে যে কোন ছবি তোলা, স্মৃতি ধরে রাখা বা ভিডিও করার জন্য ক্যামেরা বহন করে নিতে হতো। বর্তমান সময়ে ভালো মানের মোবাইলে ছবি তোলা, ভিডিও করা এই সকল কাজগুলো মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায় এবং এগুলো সহজেই মোবাইলের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায়।
আরও পড়ুন ঃ অনলাইনে ইনকাম করার কয়েকটি সেরা আইডিয়া।
ম্যাপ ও লোকেশন
ম্যাপের মাধ্যমে লোকেশন খুজে বের করা মোবাইলের উপকারিতার মধ্যে অন্যতম একটি! আগের দিনে যেমন অচেনা কোন জায়গায় গেলে লোকজনকে জিজ্ঞেস করে করে লোকেশন বা ঠিকানা বের করতে হতো। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ফোনে গুগল ম্যাপে ডিরেকশনের মাধ্যমে লোকেশন খুঁজে পাওয়া খুবই সহজ ব্যাপার। এক্ষেত্রে আপনার স্মার্টফোনে ইন্টারনেট যুক্ত করে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে লোকেশন বের করতে পারবেন।
মোবাইলে লেনদেন সুবিধা
আধুনিক যুগে মোবাইল ফোনের উপকারিতা হলো মোবাইলে লেনদেন সুবিধা। একটি স্মার্টফোন আপনার হাতে থাকলে মনে হবে যেন গোটা পৃথিবী আপনার হাতে। বর্তমানে ইমারজেন্সি মুহূর্তে টাকা লেনদেনের সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম হলো মোবাইল ব্যাংকিং। উপায়, নগদ, বিকাশ, শিওর ক্যাশ এরকম মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুব সহজেই টাকা লেনদেন করা যায় ও ইমার্জেন্সি বা ক্রিটিকাল মুহূর্তে টাকার প্রয়োজনীয়তা মিটানো যায়। যা মোবাইল ফোন ব্যবহারের অন্যতম সুফল।
মোবাইল ফোনে টিকিট ক্রয়
মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই ঘরে বসে বাস, ট্রেন, লঞ্চ কিম্বা বিমানের টিকেট খুব ক্রয় করা যায়। এই কাজটুকু করার জন্য আগের দিনের সময় নষ্ট করে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট ক্রয় করতে হতো। যাতে করে সময় ও শ্রম দুইই নষ্ট হতো। বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘরে বসে কাজটি করা যায়। এটিও মোবাইল ফোনের বড় একটি সুবিধা।
সামাজিক মাধ্যম হিসেবে সুফল
সামাজিক মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ফোনের সুবিধা অনেক! মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুব সহজেই সমাজের সকলের সাথে যুক্ত থাকা যায়। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ইমেইল, চিঠি ভয়েস রেকর্ডিং পাঠানো যায়। এতে করে মুহূর্তের মধ্যে সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যায় ও কুশলাদি বিনিময় করা সহজ হয়। এছাড়া লম্বা কাজের ফাঁকে বোরিং ফিল করলে মোবাইলের মাধ্যমে আপনজনদের সাথে কথাবার্তা বলে রিফ্রেশ হওয়া যায়। কোথাও কোন বিপদের সম্মুখীন হলে আপনজনের কাছে তথ্য জানানো যায় ও সাহায্য পাওয়া যায়।
মোবাইল ফোনে শপিং
ছোটকালে পড়েছি বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ! বর্তমান সময়ে মানুষের আর আবেগাপ্লুত হয়ে দোকানে গিয়ে বসে থেকে জিনিসপত্র পছন্দ করে কেনাকাটার প্রয়োজন হয় না। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনি যে কোন জিনিসপত্র পছন্দ করে অনলাইনে অর্ডার করে দিলে বাড়িতে বসেই পেয়ে যাবেন সেই কাঙ্খিত জিনিসপত্র। মোবাইল ফোনের অন্যতম সুফল এটি।
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা বা কুফল
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে এখন আমরা আলোচনা করব। উপকারিতার পাশে যেমন রয়েছে অপকারিতা, তেমনি সুফলের পাশে রয়েছে কুফল বা ক্ষতিকরদিক। মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও যেমন রয়েছে গাদা গাদা উপকার তেমনি এ ফোন ব্যবহারে রয়েছে কিছু অপকারিতা। নিম্নে মোবাইল ফোনের কুফলগুলো আলোচনা করা হলো।
- মোবাইলের নেশা,
- মোবাইল হারানোর ভয়,
- স্বাস্থ্য জনিত ক্ষতি,
- যখন তখন রিংটোন শুনতে পাওয়া,
- সাইবার ব্লুমিং,
- ঘুম কমে যাওয়া,
- চোখের জ্যোতি কমে যায়,
- প্রাইভেসি থাকে না,
- কানে কম শুনতে পায়,
- টাকার অপচয়,
- শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি,
- পুরুষের শুক্রানু করে যেতে পারে। ইত্যাদি।
মোবাইলের নেশা
মোবাইল ফোনের অপকারিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো মোবাইলের নেশা বা মোবাইলে আসক্তি। ছোট বড় সবারই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে করতে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ছাড়া তার আর ভালো লাগেনা। মোবাইল যেন তার নেশায় পরিণত হয়। এতে করে সকল ধরনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। অনেক প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় মোবাইল ব্যবহার করা উচিত নয়।
চোখের জ্যোতি কমে ও মাথা ব্যথা বাড়ে
দীর্ঘ সময় ধরে প্রয়োজনে তুলনা অতিরিক্ত সময় মোবাইল ব্যবহারের ফলে চোখের জ্যোতি কমে যায়। মোবাইল ব্যবহার ফলে মোবাইল থেকে বিকরিত আলোক রশ্মি চোখের উপরে অতিরিক্ত চাপ ফেলে। ফলে চোখের জ্যোতি কমে যায়। এতে করে চোখে দেখতে সমস্যা হয়। এই সমস্যা এড়িয়ে চলার জন্য যথাসম্ভব মোবাইল কম ব্যবহার করা উচিত।
মোবাইল ফোন দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করলে মাথা ব্যথা করে, এটা অন্যতম একটি কুফল মোবাইল ফোনের। মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে ব্রেন ও চোখের উপরে প্রেসার পড়ে যার কারণে দিনে দিনে মাথা ব্যথা বেড়ে যায় ও মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে শুরু করে। সেজন্য মোবাইল ফোনে যত সম্ভব ব্যবহার কম করা উচিত।
মোবাইল হারানোর ভয়
যারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, বিশেষ করে তরুণ বয়সের ছেলে-মেয়েরা সব সময় মনে করেন ফোনটা ঠিক জায়গা আছেতো বা ফোনটা হারিয়ে গেল কিনা! সব সময় ফোনের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখেন তারা। এতে করে তাদের স্বাভাবিক কাজ বিশেষ করে পড়ালেখা ও অন্যান্য কাজে মনোযোগ নষ্ট হয়। বর্তমানে মনোবিজ্ঞানীদের এক গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানা গেছে যে যুক্তরাজ্যে প্রায় শতকরা ৫৩ জন এবং ভারতের প্রায় ২৯ জন তরুণ-তরুণী মোবাইল হারানোর ভয় জনিত রোগের শিকার। মোবাইল হারানোর ভয় থেকে মুক্তি পেতে ও স্বাভাবিক কাজকর্মে মনোযোগী হতে মোবাইলের প্রতি বেশি নির্ভরশীল না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা।
স্বাস্থ্যে জনিত ক্ষতি
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকের মধ্যে অন্যতম একটি ক্ষতি হলো স্বাস্থ্যে জনিত ক্ষতি। মোবাইল ফোন দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি দেখা দেয়। মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেন স্বাস্থ্য জনিত যে ক্ষতিগুলো দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো লোব্যাক পেইন হয়, মাথা ব্যথা করে, চোখে ব্যথা করে, ক্ষুধা কমে যায়, মোবাইল থেকে বিকরিত রশ্মির কারণে ব্রেনের ক্ষতি হয়। ইত্যাদি।
যখন তখন রিং টোন শুনতে পাওয়া
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্য অন্যতম একটি হলো যখন-তখন রিংটোন শুনতে পাওয়া। যারা মোবাইলের প্রতি বেশি আসক্ত তারা মোবাইল যেখানেই থাকেন মোবাইলে রিংটোন না বাজলেও না কেন মনে হয় মাঝেমধ্যে একটা রিংটোন শুনতে পান। এতে করে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মাহত হয়। মোবাইলের প্রতি তাদের একটা ভিতি সৃষ্টি হয়।
সাইবার বুলিং
অনলাইন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে কারো আইডেন্টিটি সঠিক ভাবে নির্ণয় করা মুশকিল। সেজন্য অনলাইনে আইডেন্টিটি ঠিক না থাকার কারণে সাইবার ব্লুমিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করে এবার ব্লুমিং সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
ঘুম কমে যায়
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম ক্ষতি হলো ঘুম কমে যাওয়া। মোবাইল দীর্ঘ সময় ব্যবহার করলে বা ফোনে চ্যাটিং বা এসএমএস আদান প্রদান করলে অনেক সময় দেখা যায় মাথা গরম হয়ে যায়। ফলে ঘুম আসে না এবং এতে করে ইনসোমনিয়া গ্রো করে। হলে ঘুম কমে যায় এই ঘুম কমে যাওয়ার ফলে নানা রকম স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দেয়।
প্রাইভেসি থাকে না
মোবাইল ফোন ব্যবহারে প্রাইভেসি থাকে না। বিশেষ করে এক ধরনের দুষ্টু মনমানসিকতার লোকজন মোবাইলে আজেবাজে ছবি আপলোড করে থাকে যা একটি পরিবারের সবারই নজরে পড়ে। এই দুষ্টু চক্র মোবাইল ব্যবহার করে অনলাইনে মাধ্যমে আপনার গোপন তথ্যসহ সবকিছু হ্যাক করে নিতে পারে, যাতে করে প্রাইভেসি রক্ষা হয় না। সব সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থেকে এই প্রাইভেসি রক্ষার জন্য সচেষ্ট থাকতে হয়।
কানে কম শুনতে পায়
মোবাইল ফোন ব্যবহারের আরো একটি অপকারিতা হলো কানে কম শুনতে পাওয়া। যারা বেশি সময় ধরে মোবাইলে কথা বলেন বা কানে মোবাইল ধরে থাকেন, একটা লম্বা সময় পরে তারা কানে কম শুনে পান এবং কানের মধ্যে সবসময় আওয়াজ শুনে থাকেন। সেজন্য মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়।
টাকার অপচয় হয়
শুধু মোবাইল ফোন থাকলেই চলবে না মোবাইল ফোনকে ইন্টারনেটে সংযোগ করতে হলে বিভিন্ন প্যাকেজের ইন্টারনেট ক্রয় করতে হয়। এতে করে দেখা যায় সবার পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আবার বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রাখতে গেলে মোবাইল ফোন ব্যবহারের দরকার হয় এতে করে দেখা যায় অনেক টাকার অপচয় হয়।
শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি
মোবাইল ফোনের কুফলগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম ক্ষতি হলো শরীরের অস্থিসন্ধেগুলো ক্ষতি হয় অর্থাৎ লম্বা সময় ধরে মোবাইল ব্যবহারের ফলে একদিকে ঝুঁকে দেহকে কাজ করতে হয়। সেজন্য হাতের, পিঠের ও মেরুদন্ডের অস্থিসন্ধিগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ব্যথা হয়।
শুক্রাণু কমে যেতে পারে
মোবাইল ফোনের কুফলগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম ক্ষতি হলো শুক্রাণু কমে যাওয়া। মোবাইল ফোন দীর্ঘ সময় ধরে পকেটে রাখার পরে মোবাইল থেকে যে হাই ফ্রিকোয়েন্সির রেডিয়েশন নির্গত হয় তা পুরুষের শুক্রাণু কমে যেতে পারে বা শুক্রাণুর ঘনত্ব কমে যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ছাড়া জীবনযাত্রা প্রায় অচল মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপকারিতা অনেক বিভিন্ন আলোচনা পর্যালোচনা দিতে হবে দেখা যায় মোবাইল ফোন এতে এমন একটি ডিভাইস দিয়ে খুব সহজেই আমরা বিভিন্ন উপকারী কাজগুলো সম্পন্ন করে থাকি হতে পারে শিক্ষাক্ষেত্রে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পাশাপাশি মোবাইল ফোনে কিছু অপকারিতা লক্ষ্য করা যায় তবে এটি নির্ভর করে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর মোবাইল ফোন বেশি সময় ধরে ব্যবহার করলে উপকারিতাগুলো বেশি লক্ষণীয় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকলে ক্ষতির প্রবণতা কমে যেতে পারে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, মোবাইল ফোন বর্তমানে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে রয়েছে। তাই মোবাইল ফোন বাদ দিয়ে আমাদের জীবনযাত্রা এগিয়ে নেওয়া বেশ কঠিন। মোবাইল ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা দুটিই রয়েছে। তবে অসুবিধার চেয়ে সুবিধাই বেশি। শুধু মোবাইল ফোনই নয় যে কোন ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কুফলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে এবং সুফলগুলো কাজে লাগাতে হবে।
আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছে এই তথ্যগুলো আপনার প্রিয়জনকে জানানোর জন্য আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিতে ভুলবেন না প্লিজ আর এরকম আরও আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য সাইলেন্স সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন।
aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url